মেদিনীপুরের স্কুলবাজারে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা কালে জমল না কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোর বাজারও। মেদিনীপুর থেকে গড়বেতা— পশ্চিম মেদিনীপুরের নানা জায়গার ছবিটা মোটের উপর একই। রাস্তার ধারে ফল-ফুলের পসরা নিয়ে দোকানিরা বসলেও লক্ষ্মীপুজোর চেনা ভিড় ছিল না। আনাজ বাজারেও ক্রেতা ছিল অনেক কম। প্রতিমা বিক্রেতাদেরও আক্ষেপ, এ বার বাজার সত্যিই ভাল নয়।
শুক্রবার সকালে মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ের ফুটপাতে মাটির প্রতিমা নিয়ে বসেছিলেন রতন দাস। তিনি বলেন, ‘‘এই বছর বিক্রি কম হবে জানতাম। তাই ছাঁচের প্রতিমা করে এনেছি। তাও বিক্রি হচ্ছে না।’’ শহরের ফল বিক্রেতা সুদীপ মাইতির কথায়, ‘‘অন্য বছর লক্ষ্মীপুজোর ভোর থেকে দোকানে লাইন পড়ত। এ বার পুজোর দিন সকালেও সেভাবে ক্রেতা নেই। যাঁরা আসছেন তাঁরাও কম ফল কিনছেন।’’ মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেট মোড়, গাঁধী মোড়, হাসপাতাল রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও ফাঁকাই ছিল লক্ষ্মীপুজোর দিন। কুইকোটার বাসিন্দা এক দম্পতি বললেন, ‘‘যা হোক করে আচার মেনে পুজোটা করছি। এখন যা অবস্থা!’’
বাজার জমেনি কেশপুর, চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা-সহ জেলার অন্য ব্লক শহরগুলিতে। গড়বেতার প্রতিমা শিল্পী ফটিক দে’র পর্যবেক্ষণ, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর আগের রাতে গৃহস্থের বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে লক্ষ্মী প্রতিমা দেওয়ার যে রেওয়াজটা ছিল, এ বার তার কিছুই দেখছি না।’’ চন্দ্রকোনা রোড বাসস্ট্যান্ডের দশকর্মা ভাণ্ডারের মালিক বিকাশ তেওয়ারিও জানান, এ বার পুজোর জিনিস কেনার চাহিদাও নেই। কেশপুরের আনাজ বিক্রেতা দীপঙ্কর মান্না, অরুণ মান্নারা জানান, গত বছর লক্ষ্মীপুজোর দু’দিন আগে থেকে বাজারে বসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকার আনাজ বিক্রি করেছিলাম। এ বার তার অর্ধেকও হয়নি। কোলাঘাট, পাঁশকুড়া থেকে গড়বেতায় ফুল বিক্রি করতে এসেছিলেন গৌতম সাহা, প্রণব মাইতিরা। তাঁরাও জানালেন, ফুল কেনার ক্রেতা এ বার কম। মনে হচ্ছে লোকসানই হবে।