প্রতীকী ছবি।
শংসাপত্র দিতে অনলাইন পদ্ধতি করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। অনলাইনে সেই সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে মাথায় হাত জেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। কারণ, অধিকাংশ স্কুলে নেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের হাইস্কুলে ভর্তির জন্য ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ প্রয়োজন হয়। চলতি বছর থেকে ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ তৈরিতে অনলাইন পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু জেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ তৈরিতে বিপাকে পড়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এর ফলে শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর বেশ কয়েক দিন কেটে গেলেও বহু পড়ুয়া হাতে পাননি ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’। এতে তাদের হাইস্কুলের ভর্তিতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকেরা।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ও স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ অনলাইনে দেওয়ার জন্য শিক্ষা দফতর ‘বাংলার শিক্ষা’ নামে একটি পোর্টাল চালু করেছে। ওই পোর্টালের সম্পর্কে সড়গড় করতে গত সেপ্টেম্বরে জেলার সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং একজন সহ-শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ওই পোর্টালে জেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিভিন্ন তথ্য আপলোড করা হয়। তারপর নতুন শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের ওই পোর্টালের মাধ্যমে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, জেলার তিন হাজার ২৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশতেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ফলে স্কুল থেকে ওই পোর্টাল ব্যবহার করে ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ দেওয়া যাচ্ছে না। ওই কাজের জন্য অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস বা সাইবার কাফেতে ছুটতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাউ বলেন, ‘‘পোর্টাল ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্কুলে কম্পিউটারই তো নেই। এতে শিক্ষকদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনই পড়ুয়ারাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।’’ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অরূপ ভৌমিক বলেন, ‘‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট তৈরি করতে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার দেওয়ার দাবি করেছি আমরা।’’
‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালের ‘স্টেট রিসোর্স পার্সন’ তথা ঘোষপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রতিম মান্না বলেন, ‘‘অনলাইনে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট চালু হওয়ায় পড়ুয়া ও শিক্ষক উভয়ের সুবিধা হবে। তবে পরিকাঠামো তৈরিতে কিছু সময় লাগবে।’’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানস দাস বলেন, ‘‘এবছর এই পদ্ধতি প্রথম চালু হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে পড়ুয়াদের ভর্তি নিয়ে যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ধাপে ধাপে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে কম্পিউটার দেওয়া হবে।’’