কুড়মিদের মহাসমাবেশ। প্রতীকী চিত্র।
কুড়মি আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ, মঙ্গলবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরে ‘মাহা হান্তা জড়ুআহি’র (বড় প্রতিবাদ সমাবেশ) ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। শহরের অফিসার্স ক্লাবের মাঠে ওই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে আরও একাধিক কুড়মি সংগঠন। সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসবেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন।
আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূলমানতা (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো জানাচ্ছেন, জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন সমাবেশে যোগ দেবেন। যদিও অজিতদের এই কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তবে কর্মসূচি চলাকালীন শহরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। অজিতপ্রসাদও বলছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে। সমাজের সকলকে বলছি, কেউ প্ররোচনায় যেন পা না দেন।’’ আজ, দুপুর ১টায় প্রতিবাদ সভা শুরু হওয়ার কথা। মুখ্যবক্তা অজিতপ্রসাদই। আদিবাসী কুড়মি সমাজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের পরিবারের লোকজনকেও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, কমপক্ষে ২০-২৫ হাজার মানুষ সমাবেশে যোগ দিতে পারেন। তবে অফিসার্স ক্লাবের মাঠটি অপরিসর। ফলে শহর অবরুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সেই কারণে থাকছে পুলিশি নিরাপত্তার বিপুল আয়োজন। অন্য জেলা থেকে বাড়তি মহিলা পুলিশও নিয়ে আসা হচ্ছে।
শহরে আজ যানবাহনও চলবে ঘুরপথে। কুড়মিদের সমাবেশে আসা গাড়ি গুলিকে শহরের হিন্দুমিশন মাঠ, ঘোড়াধরা গরাম থান, সার্কাস ময়দান, বলরামডিহি পুর ময়দানে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকে হেঁটে মানুষজন অফিসার্স ক্লাবের মাঠে পৌঁছবেন। অফিসার্স ক্লাবের মাঠটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঝাড়গ্রাম-লোধাশুলি ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের (শহরের মেন রোড) পাশে। সমাবেশ চলাকালীন ওই অংশে যানবাহন চলবে না। যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য যানবাহনগুলি ঘুরপথে যাতায়াত করবে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ সরকার জানান, লোধাশুলির দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস ও সাধারণ যানবাহনগুলিকে কলেজ মোড় থেকে বংশী মোড় হয়ে ঘুরপথে পাঁচ মাথার দিকে পাঠানো হবে। আবার বিনপুরের দিক থেকে আসা যানবাহনগুলিকে পাঁচ মাথা থেকে স্টেডিয়াম হয়ে ঘুরপথে কলেজ মোড় অথবা সেটেলমেন্ট মোড়ের দিকে পাঠানো হবে।
গত ২৬ মে রাতে ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের গড় শালবনিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের পিছনে থাকা মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে ইট ছোড়া হয়। ওই হামলার ঘটনায় ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ সুয়োমোটো মামলা দায়ের করে দু’দফায় ৮ জনকে গ্রেফতার করে। পরে তদন্তভার নিয়ে সিআইডি আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে। ধৃত ১১ জনের মধ্যে জয় মাহাতো ও কৌশিক মাহাতো ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালতের নির্দেশে সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন। সিআইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আজই জয়কে ঝাড়গ্রাম বিশেষ আদালতে তোলা হবে। অন্যদিকে, রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো সহ জেলবন্দি ৯ জনকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য সোমবার ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালতে আবেদন করেন সিআইডির তদন্তকারী অফিসার মানিকলাল কারফা। সরকারি আইনজীবী প্রশান্ত রায় জানান, আজ, মঙ্গলবার ওই আবেদনের শুনানি করবে আদালত। রাজেশ-সহ ৯ জনকেও এ জন্য আজ আদালতে হাজির করা হবে।
শহরে কুড়মি জমায়েতের দিন অভিযুক্তদের আদালতে হাজিরার ধার্যদিন থাকায় আদালত চত্বরেও কড়া পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।