অবরোধে আটকে সারি সারি ট্রাক।
আন্দোলন হোক! পাশাপাশি পর্যটনও বাঁচুক! বাঁচুক ঝাড়গ্রামের অর্থনীতিও। এমনই আর্জি জঙ্গলমহলের বিভিন্ন পেশাজীবী বাসিন্দার।
কুড়মি সংগঠনগুলির আন্দোলনের জেরে খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে টানা তিনদিন অবরুদ্ধ খড়্গপুর-টাটা রেলপথ ও কলকাতা-মুম্বই জাতীয় সড়ক। ফিরছে জঙ্গলমহলের পুরনো অবরোধের স্মৃতি। যদিও ১৪ বছর আগে ওই আন্দোলন ছিল একেবারেই মাওবাদী-জনসাধারণের কমিটির যৌথ কর্মসূচি। আর এ বারে অবহেলিত কুড়মি সম্প্রদায় নিজেদের জাতিসত্ত্বার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দারা। পুজোর মুখে স্থানীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। খেমাশুলিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ থাকায় সড়কপথে সহজে কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার পথ কার্যত বন্ধ। খড়্গপুর গ্রামীণের চৌরঙ্গী থেকে মেদিনীপুর-ধেড়ুয়া হয়ে ঘুরপথে পর্যটকরা ঝাড়গ্রামে যাচ্ছেন। ধেড়ুয়া হয়ে মেদিনীপুর গিয়ে ট্রেন ধরতে হচ্ছে ঝাড়গ্রামবাসীদেরও। তবে ওই রাস্তাও খোলা থাকবে কি-না তা নিয়ে সন্দিহান আমজনতা। কারণ বৃহস্পতিবারই জাতীয় সড়কের লোধাশুলিতে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার রাজ্য সড়কে অবরোধ শুরু হয়েছে। খেমাশুলিতে ও লোধাশুলিতে অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে ও রাজ্য সড়কে আটকে থাকা রয়েছে দুরপাল্লার অজস্র লরি। আটকে থাকা লরিতে পচছে ফল, মাছ, আনাজ।
অবরোধে পুজোর পোশাকের লরি আটকে থাকায় ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হচ্ছে। আবার যে সব পর্যটক অগ্রিম বুকিং করেছেন, তাঁরাও ঘন ঘন পর্যটন সংস্থা ও অতিথিশালা কর্তৃপক্ষকে ফোন করে পরিস্থিতি জানতে চাইছেন। ঝাড়গ্রামের পোশাক ব্যবসায়ী গৌতম সিংহ বলেন, ‘‘ট্রান্সপোর্টে পোশাক আনার ব্যবস্থা করেছিলাম। লরি আটকে। সময়মত পোশাক দোকানে না আনতে পারলে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’’ পর্যটন দফতরের ঝাড়গ্রাম টুরিস্ট কমপ্লেক্সের ম্যানেজার নিমাই ঘটক বলেন, ‘‘পর্যটকরা ঘনঘন ফোন করে পরিস্থিতি জানতে চাইছেন।’’
এ দিনই কলকাতা থেকে গাড়িতে মেদিনীপুর-ধেড়ুয়া হয়ে ঘুরপথে ঝাড়গ্রামে এসে পৌঁছেছেন মণীশ পাত্র, তপতী বর্মন, স্বপ্না ঘোষালের মত বেশ কিছু পর্যটক। বিরাটির লতা রায়, যাদবপুরের অসীম চন্দর মত পর্যটকরা বলছেন, ‘‘ট্রেন না চললে ঝাড়গ্রাম বেড়াতে যাওয়ার অগ্রিম বুকিং বাতিল করতে হবে।’’ ঝাড়গ্রাম টুরিজম-এর কর্তা সুমিত দত্ত বলছেন, ‘‘পুজোর আগেই পর্যটন সহ জনজীবন স্বাভাবিক হোক। সব মহলের কাছে এটাই একান্ত অনুরোধ।’’