কোলাঘাটের চাপদায় তৈরি সেই ভেড়ি। নিজস্ব চিত্র
চাষের জমি দখল করে ভেড়ি তৈরির অভিযোগ নতুন নয়। ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে ব্লকে সংগঠিত হয়েছে অসংখ্য আন্দোলন। জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছে একাধিক স্মারকলিপি। কিন্তু বন্ধ হয়নি ভেড়ির দাপট। ফের দো-ফসলি জমি দখল করে ভেড়ি তৈরির তোড়জোড় শুরুর অভিযোগ উঠল কোলাঘাটের উত্তর জিয়াদা মৌজায়। ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন এলাকার অনিচ্ছুক চাষিরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর গত বছর ডিসেম্বর মাসে কোলাঘাট ব্লকের উত্তর জিয়াদা মৌজায় চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরি করার জন্য এলাকার চাষিদের মোটা টাকার টোপ দেন এক ভেড়ি মালিক। সেবার ভেড়ি তৈরির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এলাকার চাষিরা। অনিচ্ছুক চাষিদের পাশে দাঁড়ায় কৃষক সংগ্রাম পরিষদ। গঠিত হয় ‘উত্তর জিয়াদা মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি’।
কমিটির আন্দোলনের জেরে সেই সময় স্থগিত হয়ে যায় ভেড়ি তৈরির কাজ। কমিটির অভিযোগ, সম্প্রতি স্থানীয় কিছু চাষিদের সঙ্গে নিয়ে এক ভেড়িমালিক এলাকায় ভেড়ি তৈরির তোড়জোড় শুরু করেছে। ভেড়ি তৈরির জন্য ইতিমধ্যে চাষিদের নিয়ে কয়েকটি মিটিংও হয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু ভেড়ির জন্য জমি দিতে নারাজ এলাকারই বেশ কিছু চাষি। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় ভেড়ি হলে তার পাশের চাষের জমির ব্যাপক ক্ষতি হবে। ভেঙে পড়বে নিকাশি ব্যবস্থা। এমনিতেই কোলাঘাট ব্লকের দেড়িয়াচক, ভোগপুর এলাকায় অসংখ্য ভেড়ির কারণে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ। বর্ষার জল এখনও জমে রয়েছে চাষের জমিতে। ফলে চাষিরা ধান কাটতেও পারছেন না বলে অভিযোগ। অনেকে বাধ্য হয়ে হাঁটু সমান জলে দাঁড়িয়ে ধানের ডগা পর্যন্ত কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। ফের ভেড়ি তৈরি হলে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে উঠবে। ফের যাতে এলাকায় ভেড়ি না হয় সে জন্য উত্তর জিয়াদা মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে কোলাঘাটের বিডিও, ভূমি দফতরের আধিকারিক ও ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি মধুসূদন ভৌমিক বলেন, ‘‘প্রশাসন চাইলেই ভেড়ি তৈরি বন্ধ করতে পারে। তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। এরপরেও যদি ভেড়ি তৈরি শুরু হয় তা হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’ কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”