ধৃত চার দুষ্কৃতী। নিজস্ব চিত্র
অনেক সময়ে একই জায়গায় ফিরে আসে অপরাধীরা। মাথায় শুধু ছিল এইটুকুই। খোওয়া গিয়েছে নিজের সোনার গয়না। তবু সে দুঃখ ভুলে স্রেফ দুষ্কৃতীদের ধরতেই গয়না চুরির এক সপ্তাহ পর খড়্গপুর স্টেশনে হাজির হয়েছিলেন এক যুবতী। ভাবনা কাজে দিল। খড়্গপুরের বাসিন্দা এস ললিতার তৎপরতায় রেল পুলিশ ও আরপিএফ টাস্ক ফোর্স গ্রেফতার করল চার যুবককে।
চেন্নাইয়ের বাসিন্দা এস ললিতার বাপের বাড়ি খড়্গপুর শহরের ধানসিংহ ময়দান এলাকায়। শ্বশুরবাড়ি চেন্নাইয়ে। গত ৩ ডিসেম্বর চেন্নাই-সাঁতরাগাছি এক্সপ্রেসে করে খড়্গপুরে ফিরছিলেন এস ললিতা। স্টেশনে নামার আগে চার যুবক তাঁর ট্রলিব্যাগ ঘিরে ধরেন। সেসময় কিছু আঁচ করতে পারেননি ললিতা। বাড়ি ফিরে দেখেন, ট্রলিব্যাগের পকেট কাটা। উধাও সোনার গয়না। পরের দিন রেল পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেন দিল্লির সুলতানপুরী থানা এলাকার বাসিন্দা ওই চার যুবক রাকেশ কুমার, বসন্ত কুমার, রাজেন্দর সিংহ ও রবি কুমারকে। এস ললিতা বলেন, ‘‘আমার বিয়েতে মা কানের দুল দিয়েছিল। সেটা চুরি হয়ে যায়। তাই জেদ বেড়ে গিয়েছিল।’’
চেন্নাই-সাঁতরাগাছি এক্সপ্রেস দ্বিসাপ্তাহিক। গত সপ্তাহে আরেক দিন গিয়ে লাভ হয়নি। তবু হাল ছাড়েননি ললিতা। গত সোমবার স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ফের গিয়েছিলেন খড়্গপুর স্টেশনে। দাঁড়িয়ে ছিলেন ফুটব্রিজে। তখনই দেখা চার দুষ্কৃতীর সঙ্গে। ললিতার কাছে খবর পেয়ে সক্রিয় হয় রেল পুলিশ ও আরপিএফ টাস্ক ফোর্স। স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে তারা গ্রেফতার করে চারজনকে। তাদের তল্লাশি করে বাজেয়াপ্ত করা হয় একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, দু’টি অস্ত্র, বেশ কয়েকটি মহিলাদের মানিব্যাগ ও নগদ ২৭হাজার টাকা। মঙ্গলবার খড়্গপুর রেল পুলিশ ওই চারজনকে মেদিনীপুর জেলা আদালতে হাজির করায়। বিচারক রাকেশের চারদিনের পুলিশ হেফাজত। বাকিদের চোদ্দ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। খড়্গপুর রেল পুলিশের সুপার অমিতকুমার চৌহান বলেন, “ধৃতেরা নিজেরাই বলেছে ওড়িশা, হাওড়া-সহ রেলের বিভিন্ন শাখায় ওরা আগে চুরি করেছে।”