প্রতীকী ছবি।
শিথিল হয়েছে করোনার বিধি-নিষেধ। তবে এখনও চালু হয়নি লোকাল ট্রেন। রেলকর্মী, পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ জরুরি পেশার কর্মীদের জন্য চলছে ‘স্টাফ স্পেশাল’। তবে তাতে অন্যদের যাতায়াতের অনুমতি নেই। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত নিত্যযাত্রীরা। এই আবহে হাওড়া-মেদিনীপুর শাখায় লোকাল ট্রেন চালানোর তদ্বির করছে খড়্গপুর রেল ডিভিশনই।
গত কয়েক মাস ধরে নিত্যযাত্রীরা স্টাফ স্পেশালে ওঠার অনুমতি চাইলেও মেলেনি। রেলের এ ক্ষেত্রে হেলদোল দেখায়নি বলেই অভিযোগ। অগত্যা পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কেটে হাওড়া যেতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। চাহিদার তুলনায় সংরক্ষিত আসনের টিকিট কম থাকায় দুর্ভোগও হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন স্টাফ স্পেশালে অন্য বিভাগের কর্মীদের জন্য সিজ়ন টিকিট কাটার সুযোগ দিলেও খড়্গপুর ডিভিশন তা দেয়নি। সমস্যার সুরাহায় লোকাল ট্রেন চালানোয় জোর দিয়েছে খড়্গপুর রেল ডিভিশন। খড়্গপুর রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার গজরাজ সিংহ বলেন, “স্টাফ স্পেশালে যদি সকলকে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে লোকালের সঙ্গে কী পার্থক্য থাকল? সে ক্ষেত্রে করোনা বিধি পালন সম্ভব হবে না। আমরা তাই লোকাল ট্রেন চালাতে উদ্যোগী হয়েছি। সদর দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।”
কিন্তু যত দিন না তা হচ্ছে, তত দিন স্টাফ স্পেশালে ওঠার অনুমতি দেওয়া হোক, চাইছেন নিত্যযাত্রীরা। এই ডিভিশনের হাওড়া-মেদিনীপুর শাখায় স্টাফ স্পেশাল ৪জোড়া থেকে বাড়িয়ে এখন ৮জোড়া করা হয়েছে। এ ছাড়াও খড়্গপুর থেকে রানিতাল ও রাখামাইনস পর্যন্ত চলছে দু’জোড়া অতিরিক্ত স্টাফ স্পেশাল। খড়্গপুর-মেদিনীপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্সের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “শিয়ালদহ ডিভিশনে স্টাফ স্পেশালে প্রতিটি ক্ষেত্রে কর্মরত যাত্রীরা সিজন টিকিট কেটে যাতায়াত করছে। আমরা বারবার খড়্গপুর ডিভিশনকে চিঠি দিয়েছি। অথচ আমাদের এখানে চারটি জরুরি বিভাগ ছাড়া সিজন টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। দুর্বিষহ পরিস্থিতি। আমরা চাইছি স্টাফ স্পেশালে বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মরত নিত্যযাত্রীদের সিজন টিকিট দেওয়া হোক।”
তবে রেল এখনও পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী, রেলকর্মী-সহ চারটি জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী ছাড়া ওই ট্রেনে অন্যদের যাতায়াতে অনুমতি দেয়নি। কলকাতা পুরসভা, আবহাওয়া দফতরের মতো জরুরি বিভাগের কর্মীদেরও স্টাফ স্পেশালে ওঠার অনুমতি রেল দেয়নি। ফলে তাঁরা সিজ়ন টিকিট পাচ্ছেন না। খড়্গপুরের মালঞ্চর বাসিন্দা কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল সরকার বলেন, “করোনা কালে আমাদের তো কোনও ছুটি নেই। অথচ আমাদের মতো জরুরি পরিষেবার কর্মীদের রেল স্টাফ স্পেশালে উঠতে দিচ্ছে না। পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে প্রতিদিন সংরক্ষিত আসন পাওয়া দুষ্কর। হয় অবিলম্বে লোকাল চালু হোক না হলে স্টাফ স্পেশালের সিজ়ন টিকিট দেওয়া হোক।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি চাপেই গত সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতরে লোকাল চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে রেল সূত্রে খবর। খড়্গপুরের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার গজরাজ মানছেন, “আমাদের পাঠানো প্রস্তাব মেনে সদর দফতরের সঙ্গে রাজ্যের আলোচনা চলছে। আশা করছি দিন দু’য়েকের মধ্যে লোকাল চালুতে রাজ্যের সবুজ সঙ্কেত মিলবে।”