কড়া: মনিটরে চলছে নজরদারি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তার পরেই নির্ধারিত হবে উপ-নির্বাচনের ফল কোন দিকে যাবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরে গণনায় শান্তি বজায় রাখতে প্রস্তুত হচ্ছে প্রশাসন।
আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের অন্য তিনটি আসনের সঙ্গে খড়্গপুর সদর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের ভোট গণনা হবে। শহরের ঝাপেটাপুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে হয়েছে গণনাকেন্দ্র। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠুভাবে গণনা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রস্তুতি নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির কর্মীরাও। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয় সে বিষয়ে সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন। গণনাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও জমায়েত হবে না। বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের বাইরের এলাকা। গণনাকেন্দ্রের উত্তর দিকে বিজেপি-তৃণমূল দুই যুযুধান দলের ক্যাম্প হওয়ায় বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে ১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার পাশাপাশি বাইরে দু’টি স্তরে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। খড়্গপুরের নির্বাচনী আধিকারিক তথা মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “আমরা আগেই গণনার ঘর প্রস্তুত করে দিয়েছিলাম। পর্যবেক্ষক ও জেলাশাসক পরিদর্শনও করেছেন। সুষ্ঠুভাবে গণনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে গণনা। তার আগেই সকাল ৭টায় স্ট্রংরুম খোলা হবে। এর জন্য আগেই রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বলা হয়েছে। দুপুরের মধ্যে গণনা শেষ করতে ১৭টি টেবিলের জন্য ৭২ জন গণনাকর্মী নিযুক্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত হিসেবে রয়েছেন ১৮জন। প্রতিটি টেবিলে থাকবেন ১জন মাইক্রো অবজার্ভার, ১জন সুপারভাইজর ও ১জন সহকারী। এ ছাড়াও প্রতিটি দলে একজন করে এজেন্ট থাকবেন। এ ছাড়াও থাকবেন রিটার্নিং অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার ও পর্যবেক্ষকেরা। সংবাদমাধ্যমের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানেই বড় স্ক্রিনে ফুটে উঠবে গণনার ফল। গোটা নিরাপত্তা পরিচালনার নেতৃত্বে থাকবেন ১জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৪ জন ডেপুটি পুলিশ সুপার, ৯জন ইন্সপেক্টর ও ৫৫জন অফিসার। ভিতরে খাবার নিয়ে ঢোকা যাবে না। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ত্রিস্তরীয় কড়া নিরাপত্তায় ভোট গণনা সুষ্ঠুভাবে করতে আমরা প্রস্তুত। নির্বাচনে যেভাবে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সহযোগিতা পেয়েছি সেই আবহেই শান্তিপূর্ণ গণনার আশা করছি।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “বিজেপি নির্বাচনের দিনে অশান্তির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মানুষ ওদের মেনে নেয়নি। তাই শান্তি ছিল। তাই আমরা কর্মীদের বলেছি জয়-পরাজয় যা-ই হোক যেন তাঁরা কোনও প্ররোচনায় পা না দেন।” একই সুরে বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, “ফল যা-ই হোক তাতে সকল কর্মীকে সংযত থাকতে বলেছি। মানুষ শান্তিতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। তাই তৃণমূল যতই চেষ্টা করুক কর্মীরা যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দেয় সেই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।” কোনও দলকে না বিঁধে কংগ্রেসের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস ঘোষ বলেন, “শুধু আমাদের কর্মী নয়, তৃণমূল-বিজেপি সকলের কাছে আমাদের আবেদন খড়্গপুরে যেন শান্তি বজায় থাকে। মানুষের রায় সকলকে মেনে নিতেই হবে।”