Jail breaker

পাকড়াও জেলছুট

তদন্তে নেমে জেল চত্বর থেকে একটি আঁকশি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ নিশ্চিত, এই আঁকশির সাহায্যেই উঁচু পাঁচিল টপকেছে দুই বন্দি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৪৭
Share:

ধৃত মিঠুন দাসকে রবিবার মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়। নিজস্ব চিত্র।

মেদিনীপুর জেল থেকে পালিয়েছিল দু’জন। এদের মধ্যে একজন আগেই ধরা পড়েছিল পুলিশের হাতে। মিঠুন দাস নামে আরেক জেলছুটকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে শনিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেদিনীপুরের এক পুলিশ কর্তা মানছেন, ‘‘এক জেলছুটকে বারাসত থেকে ধরা হয়েছে।’’

Advertisement

জানা যাচ্ছে, জেলছুটের ঘটনায় ইতিমধ্যে মেদিনীপুর জেলের তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন এক অফিসার, দু’জন কর্মী। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে আরও এক অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও খবর। দুই জেলছুট জেলের যে ওয়ার্ডে ছিল, ইতিমধ্যে সেখান থেকে দু’টো মোবাইলও উদ্ধার হয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, জেলছুটেরা এই মোবাইল ব্যবহার করত।

ঘটনাটি সপ্তাহ তিনেক আগের। ঘটনায় কারা দফতরে শোরগোলও পড়ে গিয়েছিল। গুনতির সময় দেখা গিয়েছিল, জেলের দুই বন্দি নিখোঁজ। জেলছুট মিঠুন দাস এবং মনোজিৎ বিশ্বাস নামে দু’জনই সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। মিঠুনের বাড়ি বারাসতে এবং মনোজিতের কলকাতার উল্টোডাঙ্গায়। জানা যায়, এক সময়ে এই দুই বন্দি দমদম জেলে ছিল। পরে সেখান থেকে তাদের মেদিনীপুরে পাঠানো হয়। মেদিনীপুর জেলে উঁচু প্রাচীর রয়েছে। নজর মিনারও রয়েছে, যেখানে সব সময়ে রক্ষী থাকার কথা। জেলছুটের ঘটনায় জেলের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন ওঠে। কর্মীদের অনেকে নিশ্চিত ছিলেন, পালানোর পরিকল্পনা আগে থেকেই করেছিল ওই দুই বন্দি। না হলে জেলের উঁচু প্রাচীর টপকানো তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। ঘটনার পর পুলিশ যেমন তদন্ত শুরু করে, তেমন কারা দফতরও বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে।

Advertisement

ঘটনার দু’দিনের মাথায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় মনোজিৎ। তাকে উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধরা পড়ার পরে পুলিশের কাছে এই জেলছুট দাবি করে, সে প্যারোল চেয়েছিল। কিন্তু তাকে ছাড়া হয়নি। তাই সে জেল থেকে পালিয়েছে। পুলিশি জেরায় মনোজিৎ দাবি করে, মেদিনীপুর জেল থেকে পালিয়ে তারা দু’জনে হাওড়া পর্যন্ত গিয়েছিল। তারপর আর মিঠুনের সঙ্গে সে ছিল না। ফলে, মিঠুন কোথায় গিয়েছে, তা-ও সে জানে না। তদন্তে নেমে জেল চত্বর থেকে একটি আঁকশি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ নিশ্চিত, এই আঁকশির সাহায্যেই উঁচু পাঁচিল টপকেছে দুই বন্দি। পুলিশি জেরায় মনোজিৎ স্বীকার করেছে যে, পালানোর পরিকল্পনা তারা ১৫ থেকে ২০ দিন আগে থেকেই করেছিল। আঁকশি তৈরি করতে যে সব সামগ্রী প্রয়োজন, সে সব তারা জেলের মধ্যেই এক এক করে জোগাড় করেছে। গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে শনিবার বারাসতের এক এলাকায় হানা দিয়ে মিঠুনকে ধরেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement