তমলুকে পুজো দিতে সস্ত্রীক রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুকে সতীপীঠ দেবী বর্গভীমার মন্দিরে পুজো দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পুজো দিতে এসেছিলেন তিনি। পুজো দেওয়ার পর সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ও ছুঁয়ে গিয়েছেন। তার পর তমলুকের আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়ামে যান তিনি।
মন্দিরে পুজো দিয়ে ২০২১ সকলের জন্য সুখ শান্তি নিয়ে আসুক, এই প্রার্থনা করেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেছেন, ‘‘২০২০ সাল গোটা বিশ্বের মানুষের জন্য অত্যন্ত খারাপ সময় ছিল। ২০২১ মানুষের জন্য সুখ শান্তি নিয়ে আসুক। মানুষের হিংসামুক্ত জীবন কাটুক। সমস্ত নাগরিকের মৌলিক অধিকারের সুবিধা মিলুক।’’ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের বিষয়টিও উত্থাপন করেছেন ধনখড়।বলেছেন, ‘‘এ বছর প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থার সব থেকে বড় উৎসব নির্বাচন হতে চলেছে।আমি প্রথম সেবক হিসেবে প্রার্থনা করি, পশ্চিমবঙ্গের ছবি বদলানো দরকার। নির্বাচনে রক্ত ঝরুক, হিংসা হোক, এমনটা হওয়া উচিত নয়।’’ সকল ভোটার যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সে কথাও স্মরণ করিয়েছেন রাজ্যপাল। জগদীপ বলেছেন,‘‘রাজ্যপাল হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে আমার সরাসরি কোনও সংযোগ নেই। তবে আমার আগ্রহ, প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেন সুষ্ঠুভাবে চলে। ভারতীয় সংবিধানকে সবাই মেনে চলুক, এই প্রার্থনা করতেই আমি আজ পুজো দিতে এসেছি।’’
পুজো দিচ্ছেন রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র।
রাজনীতির ‘যোগ’ দূরে রেখেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ‘বহিরাগত’ কটাক্ষ নিয়ে নিজের মত জানিয়েছেন ধনখড়। ‘‘এই জেলার পুণ্যভূমিকে প্রণাম জানিয়ে বলছি, বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন তাতে যেন কোনও খাদ না থাকে।রাজ্যপাল হিসেবে বলতে চাই, দেশ এক, নাগরিক এক, সবাই ভারতের সুপুত্র। আমার মনে ভীষণ কষ্ট হয় যখন দেখি, ভারত মায়ের কোনও সন্তানকে পশ্চিমবঙ্গের কিছু লোক বহিরাগত বলে মন্তব্য করে।’’ তার পরই বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের টেনে এনে বলেছেন, ‘‘ক্ষুদিরাম বোস কি এই জন্যেই প্রাণ দিয়েছিলেন? এই জন্যই কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের পর হাজার কিলোমিটার দূরে বাংলায় বসে নিজের উপাধি ত্যাগ করেছিলেন?’’প্রধানমন্ত্রীর কৃষি যোজনা থেকে রাজ্যের যে সমস্ত কৃষকদের বঞ্চিত করা হয়েছে তার জন্য রাজ্য সরকারের প্রায়শ্চিত্ত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল।