এই জমি নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
তিন বছর আগে শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোষণা হয়েছিল শীঘ্রই গড়ে উঠব প্রকল্প। কিন্তু তা হয়নি। জমি জটে আটকে গিয়েছে নন্দীগ্রামের সরকারি আইটিআই নির্মাণ।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত এই প্রকল্পে যাঁরা জমি দিয়েছিলেন সেই জমিদাতারা চাইছেন পরিবারপিছু একজনের চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ। এর জেরে অথৈ জলে নন্দীগ্রামের আই টিআই কলেজ নির্মাণ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সোনাচূড়ার জানামোড়ে একটি আইটিআই কলেজ নির্মাণ ঘিরে টালবাহানা চলছে গত কয়েক বছর ধরে। চাকরি এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে জমিদাতারা মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৫ সালে এর শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জোরকদমে শুরু হয়েছিল কাজ। কিন্তু পরবর্তী কালে জমিদাতারা বেঁকে বসায় বিপত্তি বাধে। সোনাচুড়ায় যেখানে আইটিআই কলেজ নির্মাণের কথা সেখানে যাতায়াতের জন্য যে রাস্তা তৈরির দরকার ছিল, তার জন্য স্থানীয় ৪ জনের কাছ থেকে জমি নেওয়া হয়েছিল।
ওই জমিদাতাদের অভিযোগ, এর জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ তাঁরা পাননি। তা ছাড়া পরিবারপিছু চাকরির দাবিও পূরণ হয়নি। এ ব্যাপারে গোবিন্দপ্রসাদ পাত্র নামে এক জমিদাতা বলেন, ‘‘প্রথমে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলাম। আদালত কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তা না মানায়, বাধ্য হয়ে মামলা করি। তৎকালীন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তারপর থেকে আর কাজ এগোয়নি।’’ যদিও, জমিদাতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জেলা প্রশাসনের দাবি। কিন্তু তা তো হয়নি, উল্টে দিন যত গড়িয়েছে, সমস্যা আরও বেড়েছে।
জমিদাতাদের দাবি, তাঁরা চেয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান। কিন্তু সেই দাবি মানতে রাজি হয়নি শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে কাজ আটকে রয়েছে। যাতে দ্রূত কাজ করা যায়, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছি। যদিও ওই জায়গায় আর আইটিআই কলেজ হবে না বলে ঠিক করেছে ব্লক প্রশাসন।’’ নন্দীগ্রাম- ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, ‘‘জমিদাতাদের সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। ওঁদের বোঝানো হয়েছে যে কলেজ হলে চাকরি হবে। কিন্তু ওঁরা তা মানতে চাইছেন না। বিকল্প জমি খোঁজা হয়েছিল। সেইমত জমিও পাওয়া গিয়েছে। জেলা ও রাজ্য প্রশাসনকে রিপোর্ট দিয়েছি।’’ তবে রাজ্য সরকারের সম্মতি না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করা যাবে না বলে তিনি জানান।
যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা চান, আগের জায়গাতেই আইটিআই তৈরি হোক।