কোন্দলেই কি প্রকাশ্যে মৃত্যুসংবাদ! জল্পনা শাসকদলে

রবিবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঝাড়গ্রাম আসার কথা। তার আগেই লালগড়ে সাত শবরের মৃত্যু ঘিরে আলোড়ন পড়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লালগড় শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

রবিবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঝাড়গ্রাম আসার কথা। তার আগেই লালগড়ে সাত শবরের মৃত্যু ঘিরে আলোড়ন পড়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর, সাত শবরের মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসার পিছনে রয়েছে শাসকদলের গোষ্ঠী রাজনীতি। ক্ষমতাসীন ব্লক নেতৃত্বকে অপদস্থ করতে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর কর্মীরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তৃণমূলের অন্দরে কানাঘুষো শুরু হয়েছে।

গত জুলাইয়ে লালগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে প্রবীণ নেতা বনবিহারী রায়কে সরিয়ে শ্যামল মাহাতোকে দায়িত্ব দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলবন্দি জনগণের কমিটি-নেতা ছত্রধর মাহাতোর এক সময়ের ছায়াসঙ্গী শ্যামল রাজ্যে পালা বদলের পরে তৃণমূলে এসেছেন। লালগড় অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে দলের ব্লক সভাপতি পদে উত্তরণ হয়েছে তাঁর। লালগড় ব্লকে এখন শ্যামল-গোষ্ঠীর একচ্ছত্র দাপট। তৃণমূলের অন্দরের খবর, লালগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবিদার ছিলেন বিজল সাহা। ২০১৩ সালে পূর্ণাপাণির এলাকার ১৭ নম্বর আসন থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হন বিজল। এলাকায় তাঁর পরিচিতি রয়েছে। শবরদের সঙ্গেও রয়েছে যোগাযোগ। বিজলের সঙ্গে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বনবিহারীর সম্পর্ক ভাল।

Advertisement

বিজলকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি করার জন্য দলের অন্দরে দাবি তুলেছিলেন তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু দলীয় নেতৃত্ব পরিতোষ মণ্ডলকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই ক্ষোভে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পদে প্রথমে শপথই নেননি বিজল। পরে অবশ্য শপথ নেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত শবরদের কয়েকজন পরিজন বিজলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিজল তাঁদের ব্লক অফিসে যেতে বলেছিলেন। মঙ্গলবার বিজল নিজে জঙ্গলখাসে গিয়েছিলেন। শবরদের মৃত্যুর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিজলকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ব্লক ও জেলা নেতৃত্ব। বিজলের বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নালিশও করা হয়েছে। বিজলের অনুগামীদের অভিযোগ, ‘‘বিজলদাকে দল থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করছে দলের একাংশ।’’

লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মাহাতো এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে শ্যামলের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, বিজল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হতে না-পারার ক্ষোভে শবর মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন। বিরোধীদের হাত শক্ত করছেন।” মুখ খুলতে চাননি বিজলও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আগে পূর্ণাপাণি এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলাম। তাই কয়েকজন বাসিন্দা সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। আমি তাঁদের বিষয়টি প্রশাসনকে জানাতে বলেছিলাম। এর বেশি কিছু নয়।” ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদার বক্তব্য, “শবর-মৃত্যু নিয়ে বিরোধীরা অযথা মনগড়া অভিযোগ করছে। কী কারণে এমন হল, সেটা প্রশাসন খতিয়ে দেখছে। দলীয়স্তরে আমরাও খতিয়ে দেখছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement