বাঁধে বেআইনি নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র
রূপনারায়ণের পাড়ে গড়ে উঠেছে ছোট্ট জনপদ কোলাঘাট। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এই নদের বাঁধ ছাপিয়ে মাঝে মধ্যেই প্লাবিত হয় এই ছোট্ট শহরটি। সেচ দফতর সূত্রের খবর, নদের জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে কোলাঘাটকে বাঁচাতে গেলে রূপনারায়ণের বাঁধ আরও উঁচু করতে হবে। কিন্তু সেই কাজ করতে হলে আগে দখলমুক্ত করা প্রয়োজন বাঁধ এবং সংগল্গ। ওই কাজে তাই বাঁধ দখল করে গড়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করল সেচ দফতর।
পুর এলাকা না হলেও রূপনারায়ণ সংলগ্ন কোলাঘাট এলাকাটি স্থানীয়দের ভাষায় শহর। অত্যন্ত ব্যস্ত এই ‘শহরের’ পূর্ব দিকে দিয়ে বয়ে গিয়েছে রূপনারায়ণ। নদের ওপারে রয়েছে হাওড়া জেলা। বছর দশেক আগে কোলাঘাটের উল্টো দিকে নদ বক্ষে একটি বিশাল চর জেগে ওঠে। ওপারে চর জেগে ওঠায় কোলাঘাটের দিক দিয়ে খরস্রোতে বইতে শুরু করে রূপনারায়ণের জল। শুরু হয় বাঁধে ভাঙন। যা চিন্তা বাড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে সেচ দফতরের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কোলাঘাটের দেনান থেকে খড়িচক ব্রিজ সংলগ্ন লক্ষ্মী ভবন পর্যন্ত রূপনারায়ণ নদের বাঁধ দখল করে অসংখ্য দোকান, বাড়ি, গুদাম গড়ে উঠেছে। ফলে কোলাঘাট শহর এলাকায় রূপনারায়ণের ভাঙা বাঁধ মেরামতির কোনও সুযোগ নেই সেচ দফতরের কাছে। এ দিকে, প্রতি বছর ভরা কটাল এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রূপনারায়ণ নদের স্বাভাবিক জলস্তর থেকে তিন ফুট বেশি উপর দিয়ে জল বইতে থাকে। গত মে মাসে ‘ইয়াস’ ঝড়ের সময় পরস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। জলোচ্ছ্বাসের কারনে প্লাবিত হয়ে যায় গোটা কোলাঘাট শহর এলাকা।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, কোলাঘাটকে জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে অবিলম্বে নদের বাঁধে দিতে হবে গার্ডওয়াল। উঁচু করতে হবে নদের বাঁধও। সেই কাজের জন্য কোলাঘাট শহর এলাকায় সেচ দফতরের জায়গা দখল করে কতগুলি নির্মাণ রয়েছে, তার তথ্য জোগাড় করার কাজ শুরু হয়েছে। সেচ দফতরের পাঁশকুড়া-১ শাখার এসডিও ললিত চৌধুরী বলেন, ‘‘কোলাঘাটে সেচ দফতরের জায়গা দখল করে কতগুলি নির্মাণ রয়েছে, তার তথ্য জোগাড় করার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে আমরা দেনান ও দেহাটি খাল এলাকায় বেআইনি নির্মাণের তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ করেছি। এরপর যেমন নির্দেশ আসবে সে অনুযায়ী কাজ হবে।’’