—প্রতীকী চিত্র।
জেলা জুড়ে ক্রমেই বাড়ছে সাইবার প্রতারণা। তার জেরে প্রবীণ থেকে শুরু করে নবীন— বিপদের মুখে পড়ছেন অনেকেই। প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে জনবহুল এলাকা, স্কুলে স্কুলে চলছে সচেতনতা শিবিরও। এমন পরিস্থিতিতে ফের সাইবার অপরাধের শিকার হলেন খোদ ঘাটালের মহকুমাশাসক। একবার, দু’বার নয়— এই নিয়ে মোট ১২ বার সাইবার অপরাধের ফাঁদে জড়ালেন মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস।
কখনও মহকুমাশাসকের ছবি ও নাম ব্যবহার করে সমাজমাধ্যমের ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে চলছে প্রতারণা। কখনও আবার ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ফোন কিংবা টেক্সট পাঠিয়ে চলছে প্রতারণা। বিষয়টি নজরে আসতেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন মহকুমাশাসক। অভিযোগ পেয়েই জেলার সাইবার বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রথমে ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাসের নাম ও ছবি দিয়ে খোলা হচ্ছে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। তারপর সেখান থেকে পাঠানো হচ্ছে ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’। মহকুমাশাসকের নাম দেখেই অনেকেই ‘রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট’ করছেন। তারপরই শুরু হচ্ছে প্রতারণা।
ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে মহকুমাশাসকের বন্ধু পরিচয় দিয়ে ভুয়ো তথ্য পাঠানো হচ্ছে। কখনও বলা হচ্ছে, মহকুমাশাসকের পরিচিত সিআরপিএফ অফিসার বদলি হয়ে চলে যাচ্ছেন। দামি দামি আসবাব রয়েছে, সেগুলি কম দামে বিক্রি করে দেওয়া হবে। এ জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে। মহকুমাশাসকের পরিচিত তথা বন্ধু সিআরপিএফ অফিসার শোনার পরই অনেকে টাকাও পাঠিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু তারপর আর কোনও যোগাযোগ নেই। প্রথমের দিক এমন ঘটনার সংখ্যা হাতেগোনা হলেও, ইদানিং দ্রুত বাড়ছে সেই সংখ্যা।
এই প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমার নামে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা করা হচ্ছে। ওই প্রতারণায় কেউ সাড়া দেবেন না। ভাল করে যাচাই না করে রিকোয়েস্ট গ্রহণও করবেন না। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ স্মার্টফোনের জমানায় সাইবার অপরাধ চরমে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধের ধরনও। সাইবার বিশেষজ্ঞদের তদন্তেই উঠে আসছে সেই তথ্য। প্রবীণ থেকে গ্রাম বাংলার মহিলা— প্রতারণার ফাঁদ থেকে বাদ পড়ছেন না কেউই।
ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে পুলিশের তরফে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত সচেতনতা শিবির আরও বাড়ানো হচ্ছে।’’