প্রতীকী ছবি।
মারধর এবং দুর্নীতিতে দল থেকে সাসপেন্ড। একদা তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ নেতা— সেই দিবাকর জানাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচির প্রচার কিমিটিতে রাখা নিয়েদলের অন্দরে ক্ষোভ জমতে শুরু করেছে।
মমতা নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের আমলে গত ন’ বছরের সাফল্য রাজ্যবাসীর কাছে তুলে ধরতে ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচি করবে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের আগে বর্তমান ‘কন্যাশ্রী’, ‘রুপশ্রী’, ‘সবুজ সাথী’, ‘খাদ্য সাথী’, ‘স্বাস্থ্য সাথী’-সহ বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের প্রচার করা হবে ওই সব কর্মসূচিতে। আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে এই প্রচার কাজের জন্য তৃণমূলের নেতৃত্বদের নিয়ে কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে কয়েক মাস আগে দল থেকে সাসপেন্ড হওয়া শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকরের। তাতেই আপত্তি তুলেছেন সংশ্লিষ্ট ব্লক তৃণমূল সভাপতি শরৎ মেট্যা।
শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত দিবাকরের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার পরেই তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব দিবাকরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করে এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের পদ থেকে সরিয়ে দেন। সেই সাসপেনশন এখনও বহাল।
এমন নেতাকে কেন কমিটিতে রাখা হল, ক্ষোভ শরতদের। শরৎ বলেন, ‘‘দিবাকর এখনও সাসপেন্ড রয়েছেন। এমন নেতাকে প্রচার কমিটিতে রাখায় দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হবে। ওঁর সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে দলের বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দলের কাছে আপত্তির কথা জানিয়েছি।’’
উল্লেখ্য, তমলুক বিধানসভায় ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচির প্রচারের জন্য ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গড়া হয়েছে। তাতে দিবাকরের পাশাপাশি রয়েছেন তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতি বিশ্বনাথ মহাপাত্র, তমলুকের প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন, প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়, তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি চিত্তরঞ্জন মাইতি, জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি পার্থসারথি মাইতি, জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি দিব্যেন্দু রায়, দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস, জেলা তৃণমূল সমবায় সেলের সভাপতি গোপাল মাইতি, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল সভাপতি শরৎ মেট্যা, ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি অমল বর্মন, জেলা কমিটি সদস্য বিমল ভৌমিক, তমলুক শহর কমিটির সদস্য দেবকমল দাস, ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি ঋত্বিক আদক, তমলুক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাজল কর প্রমুখ।
দিবাকরকে নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিধানসভা আহ্বায়ক বিশ্বনাথ মহাপাত্র অবশ্য বলছেন, ‘‘কমিটিতে দিবাকরকে নিয়ে কেউ আপত্তি করেছেন কি না, জানা নেই। এমনও হতে পারে দিবাকরের সাসপেনশান তুলে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ওই এলাকার ব্লক সভাপতি বলতে পারবেন।’’ আর দিবাকরের কথায়, ‘‘আমি এখনও দলের বাইরে রয়েছি। বঙ্গধনি কমিটিতে আমাকে রাখা হয়েছে বলে মৌখিকভাবে শুনেছি়। প্রশান্ত কিশোরের দল আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তাদের কাছে আমার সাসপেনশন তুলে নেওয়া-সহ তিন দফা দাবি জানিয়েছি।’’