এ ভাবেই মারা পড়ছে প্রাণীরা। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনে রাস্তাঘাটে যানবাহনের দাপট ছিল না। মানুষ ছিল গৃহবন্দি। কিন্তু বন্য বা অন্য প্রাণী যানবাহনের অনুপস্থিতিতে গত কয়েকমাসে নিশ্চিত মনেই ঘুরে বেড়িয়েছে জঙ্গল থেকে রাস্তাঘাটে। বর্তমানে লকডাউন শিথিল পর্বে তারা পড়ছে বিপাকে। এগরা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় নিত্যদিনই গাড়ির ধাক্কায় শিয়াল, কুকুর, নেউলের মতো প্রাণী মৃত্যুর খবর সামনে আসছে। এত চিন্তায় এলাকার পরিবেশপ্রেমীরা।
এগরা-বাজকুল এবং এগরা তেমাথানি রাস্তা দুটি গ্রামীণ এলাকার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কেলেঘাই নদী তীরবর্তী ওই এলাকার জলাভূমিগুলিতে মাছ, ব্যাঙ, পোকা মাকড়কের মতো খাদ্যের যথেচ্ছ জোগান রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে প্রচুর ঝোপজঙ্গল এবং মাটির পুরনো ঢিবি রয়েছে। যেখানে শিয়াল, সাপ এবং নেউলের মতো বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর উপযুক্ত আশ্রয় স্থল।
লকডাউনে গত চার মাস রাস্তায় ওই এলাকার প্রাণীগুলি দিনরাতে নির্বিঘ্নে রাস্তা পারবার থেকে ঘোরাঘুরি করেছে। কিন্তু এখন আনলক পর্বে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা এবং গতি দুইই বেড়েছে। ফলে রাতের অন্ধকারে রাস্তায় প্রতিদিন গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হচ্ছে শিয়াল, কুকুর, নেউল-সহ একাধিক বন্যপ্রাণীর। এগরা থেকে খাড় বাজার এবং পটাশপুর হাসপাতাল মোড় থেকে সিংদা বাজার, অন্যদিকে নৈপুর থেকে দেহাটি— এই তিন এলাকায় প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচটি প্রাণীর দেহ মিলছে রাস্তায়।
এলাকার পরিবেশপ্রেমীরা এতে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাঁরা রাস্তাতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শো দিচ্ছেন। পটাশপুর-১ ব্লক জীব বৈচিত্র্য কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘গত কিছুদিনে গাড়ি দুর্ঘটনায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যু বেড়েছে। অবিলম্বে দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করে বন্যপ্রাণ বাঁচানো উচিত।’’
এভাবে প্রাণী মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য বন আধিকারিক স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’