Police Cuatody of IC

আদালত অবমাননায় হেফাজতে আইসি, জামিনও

শীতল শুধু অপহরণেই অভিযুক্ত নয়। তার বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনেরও অভিযোগ রয়েছে। বলা চলে, ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১২
Share:

ঘাটাল আদালতে আইসি’র গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদারকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠালেন ঘাটাল এসিজেএম আদালতের বিচারক অমিত সরকার। পরে অবশ্য ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শা হত্যা মামলায় অন্যতম ফেরার অভিযুক্ত শীতল মান্নাকে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার না করায় আদালত অবমাননার দায়ে পাঁশকুড়া থানার আইসিকে হেফাজতে পাঠান ঘাটাল এসিজেএম আদালতের বিচারক। তবে এ বিষয়ে সরকারি আইনজীবীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

Advertisement

২০১৮ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার কিসমত কলোড়া এলাকার বাসিন্দা নিশীথ চক্রবর্তীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে পাঁশকুড়ার রাজশহর গ্রামের বাসিন্দা শীতল মান্না-সহ মোট ছ'জনের বিরুদ্ধে। মারধর করে নিশীথকে গাড়ি করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে মুক্তি পান নিশীথ। সেই ঘটনায় শীতল ছাড়া বাকি পাঁচজন আদালত থেকে আগেই জামিন নিয়ে নেয়। শীতল ফেরার হয়ে যায়। সম্প্রতি নিশীথ আদালতে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শীতলের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ঘাটাল আদালত। অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেননি এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে কোনও তথ্য আদালতে জমা দেননি। ফলে ঘাটাল আদালত পাঁশকুড়ার আইসি'কে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ কার্যকর না করার তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট অফ অ্যারেস্ট) জারি করে। এ দিন পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক অমিত সরকার তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। দিনের শেষে ব্যক্তিগত বন্ডে মুক্তি পান পাঁশকুড়ার আইসি। বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি সরকারি আইনজীবীরা।

শীতল শুধু অপহরণেই অভিযুক্ত নয়। তার বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনেরও অভিযোগ রয়েছে। বলা চলে, ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সে। কেন এতদিন ধরে ফেরার শীতল? কেন পুলিশ এতদিনে গ্রেফতার করতে পারল না শীতলকে তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন তবে কি অদৃশ্য শক্তি আড়াল করছে শীতলকে। স্বাভাবিক ভাবে অন্য আরেকটি মামলায় শীতলকে গ্রেফতার করতে না পারার ঘটনায় থানার আইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠায় এবং তাতে বিচারক আশিসকে হেফাজতে পাঠানোয় ফের একদফা আলোড়ন শুরু হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পুলিশের অন্দরেও।

Advertisement

২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর পাঁশকুড়ার মাইশোরায় খুন হন তৃণমূল নেতা কুরবান শা। আততায়ীদের এলাকায় থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া, এলাকা চেনানো, খুনের ষড়যন্ত্র সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে শীতলের বিরুদ্ধে। কুরবান খুনের কয়েকদিনের মধ্যে ফেরার হয়য় শীতল। তার সঙ্গে ফেরার হয়ে যায় আরেক অভিযুক্ত গোলাম মেহেদি (কালু)। কুরবানের পরিবার আদালতে একাধিকবার অভিযোগ জানায়, পুলিশ শীতলকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।

কুরবানের দাদা আফজল শা এ দিন বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া থানা শীতল মান্নাকে আড়ালের চেষ্টা করছে। আদালতে সেটা প্রমাণ হল। আমি চাই পুলিশ দ্রুত ওকে গ্রেফতার করুক। তা হলে ভাইয়ের খুনের আরও তথ্য উঠে আসবে।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement