—নিজস্ব চিত্র।
রাগের মাথায় স্ত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার পরে বাড়ির পিছনে গিয়ে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দিয়েছিল ঘাতক স্বামী। এর পর গভীর রাতে বস্তায় দেহ নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি পৌঁছেছিলেন চণ্ডীয়া নদীর পাড়ে। সেখানে কাটা মাথা এক জায়গায় পুঁতে দেওয়ার পরে দেহ নিয়ে বেশ কিছুটা দূরে নদীতে ফেলে দেন। মঙ্গলবার সেই ঘটনাস্থলে ধৃত পবিত্র বর্মনকে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ভাবে মহিলাকে তাঁর স্বামী খুন করে দেহ গুম করেছেন, তা দেখে তদন্তকারীরা বিস্মিত।
মঙ্গলবার অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণে নামে। প্রথমেই অভিযুক্তকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানে অভিযুক্ত দাবি করে, রাতে বাড়ির মধ্যে স্ত্রীকে খুন করার পরে সেখান থেকে বাড়ির পিছনে প্রায় ১০০ মিটার দূরে দেহটিকে টেনে নিয়ে যান তিনি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেন। এর পরে দেহ ও কাটা মাথা বস্তায় ভরে সাইকেলে চাপিয়ে প্রায় এক কিমি পথ পাড়ি দিয়ে চণ্ডীয় নদীর ধারে পৌঁছন তিনি। প্রথমেই রাস্তা থেকে বেশ খানিকটা নেমে কাটা মাথাটিকে নদীর পাড়ে পুঁতে দেন পবিত্র। মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেন। পুলিশ সূত্রে খবর, পবিত্রকে সঙ্গে নিয়ে যখন ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল, তখন নির্লিপ্ত ছিলেন অভিযুক্ত। স্ত্রীকে খুন করে দেহ গায়েব করার ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পুলিশকে অভিনয় করে দেখান তিনি।
গত ২০ জানুয়ারি রবিবার বেলার দিকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার দক্ষিণ আড়ংকিয়ারানা গ্রামের বিল্বতলা চণ্ডীয় নদীর তীর থেকে এক মহিলার অর্ধনগ্ন মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়। তবে তাঁর মাথার হদিস তখনও মেলেনি। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশ জানতে পারে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে আড়ংকিয়ারানা গ্রামের বধূ শেফালি বর্মন নিখোঁজ। এরপরেই ময়না থানার পুলিশ গত বৃহস্পতিবার পবিত্রকে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এর পরেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে এবং শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ধৃতকে ১২ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠায়। পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়েন অভিযুক্ত। শনিবার বিকেল নাগাদ ধৃত পবিত্রকে সঙ্গে নিয়ে ময়না থানার পুলিশ চণ্ডীয় নদীর পাড় থেকে মহিলার কাটা মুণ্ডু উদ্ধার করে।