— প্রতীকী চিত্র।
প্রায় দু'বছর ধরে পর্যটকদের কাছ থেকে নেওয়া পরিষেবা কর জমা দেননি দিঘার হোটেল এবং লজের মালিকেরা। তাঁদের সকলকে কর বাবদ বকেয়া টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)।
আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন হওয়ার কথা। তার আগে এলাকার হোটেলে এবং লজগুলিকে নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে ডিএসডিএ। গত ২৭ ডিসেম্বর ডিএসডিএ-র প্রশাসনিক অফিসে জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে ওল্ড এবং নিউ দিঘার হোটেল মালিক সংগঠনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকেরা হাজির ছিলেন। নতুন বছরের গোড়া থেকে সমস্ত হোটেল এবং লজকে কী কী নিয়ম মানতে হবে, সে ব্যাপারে একগুচ্ছ নির্দেশিকা চূড়ান্ত করা হয়। সবকটি হোটেলকে বর্জ্য গুছিয়ে রাখতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থা না মানলে আর্থিক জরিমানা করা হতে পারে বলে
জানানো হয়।
পাশাপাশি জেলা পুলিশের তরফে যে 'অতিথি' পোর্টাল চালু করা হয়েছে তা ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বলে প্রশাসনের তরফে অভিযোগ করা হয়। দিঘার আসা পর্যটকদের হোটেল রেজিস্টার খাতায় বিভিন্ন অসঙ্গতির বিষয়ও আলোচনায় উঠে এসেছে। এক-একটি হোটেলের হাজার হাজার টাকা কর বাকি-র বিষয়টি তখনই সামনে আসে। অভিযোগ, ২০২২ সাল থেকে পরিষেবা কর বাবদ নেওয়া টাকা কোনও হোটেল মালিক ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেননি।
উল্লেখ্য, বাম জমানায় দিঘার হোটেলে কর ব্যবস্থা চালু করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। ২০২১ সাল থেকে পরিষেবা কর আদায়ে জোর দেন ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষ। পর্যটক-পিছু হোটেলকে ১০ টাকা করে কর দিতে হয়। সেই করের টাকা ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষের তহবিলে জমা দিতে হয়। তবে ২০২২ সাল থেকে কর আদায় অনিয়মিত হতে-হতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এগজ়িকিউটিভ অফিসার অপূর্ব বিশ্বাস বলেন, ‘‘বৈঠকে সকলের কাছে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে, ২০২৪ সালে যে মাসে যত জন পর্যটক এসেছেন বলে রেজিস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে সেই হিসেবে ২০২৩ সালের ওই মাসের কর বাবদ টাকা পর্ষদকে দিতে হবে। প্রশাসনের এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন হোটেল মালিকেরা।’’ কাঁথির মহকুমা শাসক শৌভিক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘পর্যটক কর দীর্ঘ দু'বছর ধরে পাওনা রয়েছে হোটেল মালিকদের কাছে। সেই কর পর্ষদে জমা পড়লে দিঘায় উন্নয়নমূলক কাজ অনেক বেশি করা যাবে।’’
দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের সভাপতি তথা তৃণমূল পরিচালিত পদিমা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশান্ত পাত্র বলেন, ‘‘হোটেল পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-কানুন বেঁধে দিয়েছে প্রশাসন। বলা হয়েছে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রেজিস্টার খাতা অনুযায়ী যাবতীয় পর্যটক কর পর্ষদে জমা দিতে হবে। এখন থেকে অতিথি পোর্টালে পর্যটকদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হবে। প্রশাসন অতিথি পোর্টাল এবং হোটেলের রেজিস্টার দুটোই খতিয়ে দেখবেন। যদি কেউ তুলনায় কম টাকা দেয় তা হলে মাথাপিছু পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা দিতে হবে।’’