New Digha

Horse Riding: ‘বিষ্ঠায় দূষণ’! তাই দিঘা, শঙ্করপুরে গিয়ে আর ঘোড়া চড়া যাবে না, জারি নিষেধাজ্ঞা

সৈকতে পড়ে থাকা ঘোড়ার মল থেকে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এই কারণ দেখিয়ে ঘোরসওয়ারি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ।

Advertisement

সুমন মণ্ডল 

দিঘা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৫৯
Share:

দিঘার সমুদ্র সৈকতে ঘোড়সওয়ারি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ।

দিঘার সমুদ্র সৈকতে ঘোড়সওয়ারি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। কালো-সাদা ঘোড়ার পিঠে চড়ে সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর জন্য মুখিয়ে থাকেন পর্যটকেরা। সেই সওয়ারি এ বার পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হতে চলেছে দিঘা, শঙ্করপুরে। সৈকতে পড়ে থাকা ঘোড়ার মল থেকে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এই কারণ দেখিয়ে ঘোরসওয়ারি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ।

Advertisement

পর্ষদ সূত্রে খবর, বছর দুয়েক আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে তা কার্যকর করা যায়নি। এ বার সেই নির্দেশ কঠোর ভাবে মেনে চলার জন্য ঘোড়া-ব্যবসায়ীদের কাছে বার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই।

দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক মানসকুমার মণ্ডল বলছেন, ‘‘ঘোড়ার বিষ্ঠা ভীষণ বিষাক্ত। এর থেকে ব্যাপক দূষণ ছড়ায়। ঘোড়ার মল সরাসরি সমূদ্রের জলে মিশছে। পর্যটকরা দূষিত জলে স্নান করলে তাঁদের রোগব্যাধি হতে পারে। তা ছাড়া ঘোড়ার খুরের ধাক্কায় সৈকতের বাঁধানো অংশও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সব দিক বিবেচনা করেই দিঘায় এ বার ঘোড়া চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’’

Advertisement

এই মুহূর্তে পুরনো দিঘা ও নতুন দিঘা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি পরিবার ঘোড়া ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অনেক পরিবার কয়েক প্রজন্ম ধরে ঘোড়সওয়ারি করিয়ে পেট চালিয়ে আসছে। নিউ দিঘার শেষ প্রান্তে সমুদ্রতটে ঘর বানিয়ে ৪০-৫০ বছর ধরে রয়েছে বেশ কিছু পরিবার। প্রশাসনের এই নির্দেশের ফলে তাঁদের রুজিরুটিতে টান পড়ল বলেই জানাচ্ছেন ঘোড়া-মালিকেরা।

বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধের জেরে পর্যটকশূন্য রয়েছে দিঘা। কবে বিধিনিষেধ শিথিল হবে, কবে আবার সৈকত শহরে আসতে শুরু করবেন পর্যটকেরা, এই ভেবেই দিন গুনছিলেন ব্যবসায়ীরা। তার মধ্যে এমন সংবাদে ভেঙে পড়েছেন ঘোড়া-ব্যবসায়ী শেখ সিরাজুল। তাঁর কথায়, ‘‘লকডাউনে আমরা এমনিতেই খেতে পাচ্ছি না। কোনও ক্রমে আধপেটা খেয়ে বেঁচে আছি। এত গুলো পরিবার দিঘায় ঘোড়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কোনও বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা না করেই এ ভাবে হঠাৎ ঘোড়সওয়ারি বন্ধ করে দেওয়া হল! এর পর কী কাজ করব আমরা? কী ভাবে পেট চালাব? না খেতে পেয়ে মরতে হবে তো!’’

সৈকতে ঘোড়ায় চড়া বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য ইতিমধ্যে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির দ্বারস্থ হয়েছেন ঘোড়া-মালিকেরা।

এ বিষয়ে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিঘা সৈকতে আপাতত ঘোড়সওয়ারি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শহরের রাস্তায় ঘোড়ায় চড়তে চাইলে বাধা নেই। এই মুহূর্তে সমুদ্র সৈকতে ঘোড়া চলাচলে নিষেধাজ্ঞার দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সৈকতে পর্যটকদের ঘোরাফেরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কিছু মালিক ঘোড়া নিয়ে সমুদ্র-সৈকতে চলে যাচ্ছেন। এর ফলে সৈকতে ভিড় জমছে। তা ছাড়া দূষণের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।’’

তবে ঘোড়া ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে অখিলের বক্তব্য, “এই সিদ্ধান্ত পরে বিচার বিবেচনা করা হবে। ঘোড়া ব্যবসায়ীরা তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এত গুলো পরিবারের সমস্যার দিকটিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। ঘোড়া-ব্যবসায়ীদের পরিবারের কথা ভেবে সদর্থক ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। রাজ্যের করোনা বিধিনিষেধ উঠে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement