শুভেন্দুকে নিয়ে এমন হোর্ডিংয়ে বিতর্ক উঠেছে।
তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা রাজ্যের পরিবহণ-সেচমন্ত্রী হিসেবে রাজনৈতিক পরিসরের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও নানা সেবামূলক কাজে শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা গিয়েছে। শুভেন্দু-অনুগামীদের সক্রিয়তায় সাম্প্রতিক কালে সেই উদ্যোগ আরও বেশি চোখে পড়ছে। আর এ নিয়ে তাঁর নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরেই দলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। শুক্রবার ছবি দিয়ে শুভেন্দুর প্রশস্তি-প্রচারে সেই প্রশ্ন জোরাল হয়েছে।
এ দিন জেলা সদর তমলুক শহরের প্রায় সর্বত্র দেখা গিয়েছে শুভেন্দুর ছবি-সহ হোর্ডিং। সবক’টিতেই তাঁকে ঘিরে স্তুতির ছড়াছড়ি। কোথাও তাঁকে ‘বাংলার মুক্তি সূর্য’, কোথাও ‘সংগ্রামের অপর নাম’, ‘আন্দোলনের এক নাম’, ‘উন্নয়নের কান্ডারি’, ‘জনগণমন নায়ক’, ‘আমাদের আদর্শ’, ‘দীনজনের ত্রাতা’, ‘মানবিকতার অপর নাম’ ইত্য়াদি নানা বিশেষণে ভূষিত করা হয়েছে। কোনওটিতেই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বা দলের প্রতীক নেই। ফলে, জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। হোর্ডিংয়ে সৌজন্যে বলে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের প্রায় সকলেই শহর তৃণমূলের কোনও না কোনও পদে রয়েছেন। দলের মধ্যে থেকে তাঁদের এমন কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলা নেতাদের একাংশ।
হোর্ডিং দেওয়ার কথা স্বীকার করে তমলুক শহর তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য আনন্দ নায়কের যুক্তি, ‘‘শুভেন্দুবাবু দলের নেতা তো বটেই। তাঁকে একজন আদর্শ ব্যক্তি হিসেবেও মানি। রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি সমাজকর্মী হিসেবেও আমরা তাঁর সঙ্গে রয়েছি। তাই তাঁর ছবি-সহ এমন হোর্ডিং দিয়েছি।’’ যদিও রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, দলের সাংগঠনিক রদবদলের পর কিছু দিন ধরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শুভেন্দু-অনুগামীদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় জেলা সদরে অরাজনৈতিক পরিচয়ে শুভেন্দুর ছবি-সহ তাঁর প্রশস্তি করে তৃণমূল নেতাদের দেওয়া হোর্ডিং তাৎপর্যপূর্ণ।
জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘সব কিছুই নজরে আছে। শুভেন্দুবাবু দলেরই লোক। দলের যাঁরা এসব করছেন তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াও অন্য পরিচয় রয়েছে। শুভেন্দুকে ভালবেসে তাঁরা এ সব করছেন। এতে অসুবিধার কী আছে!’’
কী বলছে বিজেপি? দলের তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘রাজ্যে তৃণমূল সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি দলে তাঁর গুরুত্ব কমেছে। দলে তাঁর গুরুত্ব বাড়াতে অনুগামীরা এসব করছেন। তৃণমূলের অন্তর্কলহ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। মানুষ সব দেখছে। আমাদের বলার কিছু নেই।’’