—প্রতীকী ছবি।
অনেকটা পথ ঘুরে ফের শহরতলির কাছে হাতির পাল! উদ্বেগে স্থানীয়েরা। মঙ্গলবার রাতে হুলস্থুল পড়ে মেদিনীপুর গ্রামীণের নেপুরায়। আচমকাই গ্রামে হাতি ঢুকে পড়ে। অনেক খেত লন্ডভণ্ড করে দেয়। এলাকাটি কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। শহরের পাশেই রয়েছে এই গ্রাম পঞ্চায়েত।
স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত ঘোষ বলছিলেন, ‘‘গ্রামের প্রায় সকলে তখন ঘুমোচ্ছেন। হঠাৎই কয়েকজনের চিৎকার শুনি। বুঝতে পারি, হাতির পাল ঢুকেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘হাতির পালের ভয়ে আমরা রাতে ঘর থেকে বার হতে পারিনি। শুধু তো রাতের বেলায় নয়, কখনও কখনও দিনেও ওই গ্রামে ঢুকে পড়ছে হাতির পাল।’শহরতলির ওই এলাকায় যে হাতির পাল এসেছিল তা মানছে বন দফতরও। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার কথায়, ‘‘মঙ্গলবার রাতে ওখানে হাতির দল এসেছিল। তবে এখন আর হাতি ওখানে নেই। একটু সরে গিয়েছে।’’ হাতির ভয়ে গ্রামবাসীদের প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত! ঘর ভাঙছে। খেত নষ্ট করছে। মঙ্গলবার রাতেও মেদিনীপুর গ্রামীণের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফসল নষ্ট করেছে দলটি। কোথাও আলু নষ্ট হয়েছে। কোথাও আনাজ।
হাতির দল ঠিক কোথায় সরে গিয়েছে? বুধবার বন দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে যে দলটি শহরতলিতে এসে চরকিপাক খেয়েছে, সেটি এখন মেদিনীপুর গ্রামীণেরই চাঁদড়া রেঞ্জ এলাকায় রয়েছে। দলটিতে ৪০- ৪২টি হাতি রয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, দলটি রয়েছে চাঁদড়ার বালিচূড়ায়। এ ছাড়াও আরও কিছু হাতি ছড়িয়ে- ছিটিয়ে রয়েছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, হাতির দলটির ঝাড়খণ্ডে ফিরে যাওয়ার কথা। তবে সহজে তারা সেই দিকে যাচ্ছে না। ঝাড়গ্রাম হয়েই দলটির ঝাড়খণ্ডে ফেরার কথা। হাতির হানায় ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে চলায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এলাকায়। স্থানীয়দের সেই ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে হুলাপার্টির সদস্যদের উপর। ইতিমধ্যে কয়েক দফায় বাধার মুখে পড়েছেন হুলাপার্টির সদস্যরা। একাধিক এলাকায় তাঁদের উপর ‘হামলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা অজয় ঘোষের ক্ষোভ, ‘‘হাতির তাণ্ডবে গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। খবর দিলেও বনকর্মীরা সময় মতো হাতি খেদাতে আসছেন না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘হাতি খেদানোর ক্ষেত্রে বন দফতরের পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। তাই ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে। মেদিনীপুরের ডিএফওর কথায়, ‘‘এলাকা থেকে হাতি তাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে। দলটির গতিবিধির উপর নজরও রাখা হয়েছে। হাতির স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সবদিক দেখেই হাতি তাড়ানোর কাজ করতে হচ্ছে।’’