এএফপি-র তোলা ফাইল চিত্র।
নতুন দুই এলাকায় মিলেছে করোনা আক্রান্তের খোঁজ। শনিবার ওই দুই এলাকা পরিদর্শনে গেলেন জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে এ দিন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন হলদিয়ার করোনা আক্রান্ত তিন ব্যক্তি।
শুক্রবারই সামনে এসেছে কাঁথি-১ ব্লকের নয়াপুট গ্রাম পঞ্চায়েত এবং মহিষাদলের একটি গ্রামের দুই বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কাঁথির আক্রান্ত ব্যক্তি শহরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তিনি বর্তমানে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর মহিষাদলের বাসিন্দা কলকাতার একটি মিষ্টি দোকানে কাজ করতেন। তিনি সম্প্রতি গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন।
এদিন ওই দুই এলাকায় যান পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ, পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত কুমার রায় এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল। কাঁথিতে আক্রান্তের বাড়ির প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার পাশাপাশি তাঁদের মাস্ক দেয় প্রতিনিধি দল। এলাকাবাসীকে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে বাড়িতে সুরক্ষিত থাকার জন্য পরামর্শ দেন জেলাশাসক এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যেই ওই গ্রাম সিল করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে আক্রান্তের বাড়ি এবং গোটা এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে করেন দমকল কর্মীরা।
আক্রান্তের পরিবারের তিন জন সদস্য চণ্ডীপুরের করোনা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। তাঁদের এবং আক্রান্তের পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা ৩২ জনেরও করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর কাঁথি শহরে যে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে ওই রোগী গিয়েছিলেন, সেই চিকিৎসককে চেম্বার বন্ধ রেখে ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকার জন্য পরামর্শ দেয় স্বাস্থ্য দফতর।
মহিষাদলের একটি গ্রামের বাসিন্দার বৃহস্পতিবার রাতে করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার মানুষজন। এ দিন ওই এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি সচেতন এবং সতর্ক হওয়ার বার্তা দেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই এলাকায় লকডাউন আরও জোরালো ভাবে পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে বাড়ি থেকে না বের হন, তার-ও অনুরোধ করা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকায় করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। মানুষকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার বার্তা দিতে এ দিন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। প্রয়োজন ছাড়া এলাকার মানুষ যাতে বাড়ি থেকে খুব একটা না বেরোন সে ব্যাপারে তাঁদের বোঝানো হয়েছে। ’’
অন্যদিকে, গত ৭ মে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় হলদিয়ার তিন ব্যক্তি পাঁশকুড়ার করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ দিন বিকেলে তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হলদিয়া ব্রজলালচকের এক ভূষিমাল বিক্রেতা বৃদ্ধের থেকে ওই তিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হওয়া ওই তিন জনকেই আগামী ১৪ দিন গৃহবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।