হলদিয়া বন্দর। নিজস্ব চিত্র
২০২২-’২৩ আর্থিক বর্ষে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি (হলদিয়া) বন্দর প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা নিট লাভ করেছে। যা গত আর্থিক বর্ষের তুলনায় প্রায় ২.৫ গুন বেশি বলে দাবি করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, রাশিয়া, ইউক্রেনে সমস্যার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলির আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও বন্দরের এই লাভের কারণ পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ বলে বন্দর সূত্রে খবর।
২০২১-’২২ আর্থিক বছরে শুধু হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স ৫৮২ কোটি টাকা লাভ করেছিল। কিন্তু কলকাতা ডক সিস্টেমের ব্যবসা মিলিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের নিট লাভ হয়েছিল ১২০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের দুটি অংশ হল কলকাতা ডক সিস্টেম ও হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স। ২০২২-’২৩ আর্থিক বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা লাভ বাড়িয়ে হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স ৬৩২ কোটি লাভ করলেও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের নিট লাভ বেড়ে হয়েছে ৩০৪ কোটি টাকা। বন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিট লাভের পরিমাণ এত বাড়ার কারণ, পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যয় সংকোচনের ফল।
বন্দরের চেয়ারম্যান পি এল হারনাধ বলেন, ‘‘এই আর্থিক বর্ষে বন্দর প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। যা গত আর্থিক বর্ষের থেকে বেশ কিছুটা বেশি।’’
বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, চলতি ইউরোপীয় যুদ্ধ বা রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাতের পাশাপাশি নেপাল, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট, দক্ষিন চিন সাগরে তৈরি হওয়া আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে পণ্য পরিবহণে কিছুটা ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এছাড়াও হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার কারণে বন্দরের একটি বার্থ সম্পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব হয়নি। তা সত্ত্বেও হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স আগের আর্থিক বছরের তুলনায় ২০২২-’২৩ বর্ষে ৫০ কোটি টাকা বেশি লাভ করেছে কারণ স্যান্ড হেড এবং সাগরে ফ্লোটিং বা ভাসমান ক্রেন ব্যবহার করায় বড় জাহাজের আসা বাড়ছে। গত আর্থিক বছরে এই কেপ সাইজ জাহাজের সংখ্যা ছিল ৩০টি। যা আগের আর্থিক বর্ষে ছিল মাত্র ১২টি। এ ছাড়া হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সে ভ্রাম্যমাণ ক্রেন ও কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে জাহাজ থেকে পণ্য উত্তোলন করে সরাসরি পরিবহণ কন্টেনারে বোঝাই করার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় দ্রুত পণ্য থালাস ও বোঝাই করতে সক্ষম হওয়ায় অনেক বেশি জাহাজকে বন্দরে ঠাঁই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি নাব্যতাও কিছুটা বাড়ায় বেশ কিছু সংস্থা বন্দরের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।