গরমের জেরে জেলায় বিভিন্ন এলাকায় জলসঙ্কট চলছেই। কিন্তু শুধু গরম নয়, এই জলসঙ্কটের কারণ খুঁজতে গিয়ে হলদিয়া পুরসভার হাতে এসেছে এক অন্য তথ্য। জানা গিয়েছে, অবৈধ জলের লাইন, সরাসরি পুরসভার লাইনে পাম্প চালিয়ে জল টেনে নেওয়ার ফলেই হলদিয়া পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিতে শুরু করেছে। হলদিয়া পুরসভার জল দফতরের পুর পারিষদ চন্দন মাজি বলেন, ‘‘পুরসভাকে না জানিয়ে অবৈধভাবে অনেকে জলের লাইন নিয়েছেন। আবার অনেকে পুরসভার জলের লাইন থেকে সরাসরি পাম্প চালিয়ে জল তুলে টেনে নিচ্ছেন। ফলে শহরের বেশ কিছু এলাকায় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ বিষয়টি নজরে আসতেই আমরা শহর জুড়ে অবৈধ জলের সংযোগের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। প্রমাণ পেলে জলের লাইনও কেটে দেওয়া হচ্ছে।’’
হলদিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার ৭, ১০, ২৩, ২৫ ও২৬ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বেশ কিছু এলাকায় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওই সব এলাকায় পুরসভার জলের লাইনে চাপ কম রয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। জলের সঙ্কটের অভিযোগ আসতেই পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলের অবৈধ লাইন কাটার কাজ শুরু করেছে হলদিয়া পুরসভা। কয়েকদিন আগে পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডলের ওয়ার্ড এলাকায় জল দফতরের পুর পারিষদ চন্দন মাজির নেতৃত্বে অবৈধ জলের লাইনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। ওই ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি অবৈধ জলের লাইন কেটে দেওয়া হয়। এমনকি পুরসভার চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডে পুরসভার পাইপ লাইনের জল দিয়ে পুকুর ভরানোর ঘটনা নজরে এসেছে। তবে পুরসভার আধিকারিকরা জলের ওই লাইন কেটে দিয়েছেন বলে চন্দনবাবু জানান।
এ দিকে পুরসভার কর্মীদের মদতেই অবৈধ জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি টাকার বিনিময়ে জলের লাইন দেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে। কয়েক দিন আগেই অবৈধ জলের লাইন কাটতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুজন অস্থায়ী কর্মীকে সাসপেণ্ড করেছেন হলদিয়া পুরসভা কর্তৃপক্ষ। হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল জানান, ‘‘হলদিয়ার ২০নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার জল দফতরের আধিকারিকরা অবৈধ জলের লাইন কাটতে গিয়েছিলেন। ওই সময় পুরসভার পিওন তাপস রঞ্জিত এবং পুরসভার আর এক কর্মী বিনন্দ মণ্ডল এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে জল দফতরের আধিকারিকদের কাজে বাধা দেন।’’ তিনি আরও জানান, ২০নম্বর ওয়ার্ডেই প্রায় ৩০০টি অবৈধ জলের লাইনের হদিশ মিলেছে। যাঁরা অবৈধভাবে জলের লাইন নিয়েছেন তাঁদের বৈধভাবে লাইন করার জন্য পুরসভার যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছে।