সরকারি অনুদানে তৈরি হোম স্টে-র ব্যবহার ব্যক্তিগত কাজে!
Dokanda Flower garden

সরেছে অতিথি নিবাসের বোর্ড

অভিযোগ, উদ্বোধনের কয়েকদিনের মধ্যেই সরকারি বোর্ডগুলি খুলে ফেলা হয়েছে। কোনও পর্যটক ঘরের খোঁজে এলে তাঁদের বলা হচ্ছে, ঘর খালি নেই।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:০৫
Share:

দোকান্ডার এই বাড়ি থেকে 'হোম স্টে'র সরকারি বোর্ড খুলে নেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র ।

পর্যটকদের কথা ভেবে জেলার ফুলের উপত্যকা দোকান্ডায় সরকারি অনুদানে গড়ে উঠেছিল তিনটি অতিথি নিবাস। তবে ওই তিনটি অতিথি নিবাসের কোনওটিতেই পর্যটকদের রাখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বরং অভিযোগ, উদ্বোধনের কিছুদিনের মধ্যেই সেখানের সরকারি বোর্ড খুলে নেওয়া হয়েছে এবং সরকারি অনুদান দিয়ে তৈরি ওই বাড়িতে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Advertisement

ফুলের টানে প্রতি বছর শীতকালে পাঁশকুড়ার দোকান্ডায় পর্যটক সমাগম হয়। দোকান্ডায় তিন মাস ধরে চলে ফুলের মেলা। বিপুল পরিমাণ পর্যটক সমাগম হলেও দোকান্ডায় পর্যটকদের বিশ্রাম নেওয়া বা রাত্রিযাপনের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। তাই দোকান্ডায় অতিথি নিবাস গড়ে তোলার জন্য রাজ্য পর্যটন দফতর থেকে এলাকার তিনজন ব্যক্তিকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। সেই টাকায় ওই ব্যক্তিরা নিজেদের বাড়ির ঘর, হলঘর ইত্যাদি সংস্কার করে পর্যটকদের বিশ্রাম নেওয়ার মতো ব্যবস্থা করেন। গত মাসে সেগুলির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়। তিনটি অতিথি নিবাসের সামনে সরকারি বোর্ডও লাগানো হয়।

অভিযোগ, উদ্বোধনের কয়েকদিনের মধ্যেই সরকারি বোর্ডগুলি খুলে ফেলা হয়েছে। কোনও পর্যটক ঘরের খোঁজে এলে তাঁদের বলা হচ্ছে, ঘর খালি নেই। কলকাতার বাসিন্দা স্নিগ্ধা সরকার বলেন, ‘‘দোকান্ডায় পরিবার নিয়ে এসেছিলাম। শুনেছিলাম এখানে হোম স্টে রয়েছে। এখানে বলে দেওয়া হচ্ছে ঘর খালি নেই। এরকম সবাইকে বলা হচ্ছে।’’ একই অভিজ্ঞতা উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা রূপঙ্কর মিশ্রের। তিনি বলেন, ‘‘হোম স্টেগুলিতে কাউকেই ঘর দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দেখছি বাড়ির মালিকেরা সেগুলি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন।’’

Advertisement

ঘর পাওয়া যায় কি না, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে দেবাশিস খাঁড়া নামে এক বাড়ির মালিককে ফোন করা হয়। তিনি জানান, বাইরে রয়েছেন। পরে রেজিস্টার দেখে জানাবেন ঘর পাওয়া যাবে কি না। অমিত সামন্ত নামে আরও এক হোম স্টে'র মালিকও বলেন, ‘‘ঘর খালি নেই।রেজিস্টার দেখে পরে বলব ঘর পাওয়া যাবে কি না।’’ হোম স্টে যে চালু নেই, দোকান্ডার স্থানীয়রাও তা বলছেন। তাঁদেরও দাবি, সবগুলিই ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে জুড়েছে রাজনীতি। পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা অঞ্জন মাইতি বলেন, ‘‘তৃণমূল পরিচালিত পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতি শাসক দলের পছন্দের লোকজনদের হাতে হোম স্টে'র নামে ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। সেগুলির একটিতেও পর্যটকদের রাখা হয় না। তৃণমূল সরকারি টাকায় এভাবে ভোটার কিনছে।’’ যদিও পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘হোম স্টেগুলি চালুই রয়েছে। সেগুলি যাতে আরও ভালভাবে চলে আর জন্য পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement