বেদখল: পূর্ত দফতরের জমিতে এভাবেই পড়ে থাকে ইট-বালি আর আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা ময়দানের মত এই খোলা ময়দান হতেই পারত কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই দূষণে জেরবার মেচেদা শহরের ফুসফুস। এলাকার ছেলে-মেয়েরা পেতেই পারত খেলার জন্য এক টুকরো সবুজ মাঠ। অথচ বেদখলদার আর আবর্জনার স্তূপে এলাকার অন্যতম দূষিত এলাকা হয়ে পড়ে রয়েছে মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পূর্ত দফতরের ময়দান।
পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের কর্তাদের চোখের সামনে কয়েক একরের সরকারি জমি ক্রমশ বেদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পূর্ত দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে মেচেদা স্টেশন ও কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ দিকে পূর্ত দফতরের কয়েক একর জমি রয়েছে। এক সময় এখানে দফতরের একটি অফিস ও একাধিক গুদাম ঘর ছিল। কাছেই রয়েছে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ও হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক। এমন এক গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের কেন্দ্রে থাকা পূর্ত দফতরের জমির পাশেই বহু বসতবাড়ি ও দোকান গড়ে উঠেছে।
সরকারি ওই জমি জবরদখল করে অস্থায়ীভাবে বাড়ি তৈরি শুরু হয় কয়েক বছর আগে। ২০০২ সাল নাগাদ জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের সময় ওই জমির একাংশ ঠিকাদার সংস্থা নির্মাণ সামগ্রী রাখার জন্য ব্যবহার করেছিল। কাজ শেষ হওয়ার পরই ওই ময়দানের জায়গা বেদখল হতে থাকে। এক বছর হল ওই ময়দানে মেচেদা মাছ বাজার-সহ বিভিন্ন দোকান থেকে আবর্জনা ফেলা হয়। ফলে দুর্গন্ধে এলাকায় টেঁকা দায়।
আর মাঠের এই হালের জন্য প্রাতঃভ্রমণে যাওয়া বয়স্করা এবং খেলতে যেতে সমস্যায় পড়ছে খুদেরা। স্থানীয় একটি ক্লাবের সম্পাদক আশিস অধিকারী বলেন, ‘‘মেচেদা শহরে খেলার বড় ময়দান নেই। পূর্ত দফতরের এই জায়গাটি সরকারিভাবে ময়দান হিসেবে গড়ে তোলা হলে ভাল হত। জায়গা বেদখল হচ্ছে। আবর্জনার ঠেলায় নিঃশ্বাস নেওয়াই দায়!’’
জমি বেদখল হওয়ার কথা মানছেন পূর্ত দফতরের কর্তারাও। পূর্ত দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘দফতরের ওই খালি জায়গায় বেআইনি দখল রুখতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’ শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বামদেব গুছাইত বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের জমির কিছু অংশ দখল করে একাধিক বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। তবে সরকারি ওই জমির কিছু অংশে পানীয় জলপ্রকল্প, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও কর্মতীর্থ প্রকল্প গড়ে তোলার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’