মেদিনীপুরে জলপ্রকল্পের এই জমিই বেদখল হয়েছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
সরকারি জমি বেদখলের অভিযোগ নতুন নয়। এ বার পুরসভার জলপ্রকল্পের জমি বেদখল করার অভিযোগ উঠল মেদিনীপুরে। পুরসভায় এ নিয়ে অভিযোগও জমা পড়েছে। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলছেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখাও হয়েছে। পুরসভার জমি পুরসভারই থাকবে।”
এক পুরকর্তার কথায়, “এ ক্ষেত্রে নোটিস দেওয়া হয়েছে। জমির মাপজোকও হয়েছে। আশা করা যায়, শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে!” শুধু পুরসভা নয়, স্থানীয় বাসিন্দারা মহকুমাশাসক, জেলাশাসকের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “জলপ্রকল্পের জমি বেদখল হচ্ছে। অথচ, পুরসভা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। নিরাপত্তার কারণে আমরা নামপ্রকাশ করছি না। তবে প্রশাসনের সব মহলেই অভিযোগ জানিয়েছি। পুরসভার জমি পুনরুদ্ধারের আর্জি জানিয়েছি।”
মেদিনীপুরে সরকারি জমি বেদখলের বহু অভিযোগ রয়েছে। শহরের রাঙামাটি, অরবিন্দনগর, অশোকনগর-সহ বহু এলাকায় সরকারি জমি বেদখল হয়েছে বলে অভিযোগ। অথচ, তৃণমূল সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে জবরদখল নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও যে জবরদখলের ছবিতে বিশেষ বদল আসেনি মেদিনীপুরের ছবিই তার প্রমাণ।
মেদিনীপুর শহরের নান্নুরচকের এই জলপ্রকল্প থেকেই শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইতিমধ্যে জলপ্রকল্পের জমির ১২- ১৫ ফুট জায়গা দখল করে বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। পুরসভার এক সূত্রে খবর, অভিযোগ জমা পড়ার পরে কয়েকজনকে নোটিস দেওয়া হয়। যাঁদের নামে জমি দখলের অভিযোগ আসে, তাঁদেরই নোটিস দেওয়া হয়। পরে পুরসভায় এক শুনানিও হয়। ওই পর্যন্তই। এরপর আর তেমন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ, কোনও অজ্ঞাত কারণে ওই ফাইল ধামাচাপা পড়ে যায়। সেই ফাইলের ফিতে আর খোলেনি।
শহরের কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌমেন খানের কথায়, “নান্নুরচকের প্রকল্প থেকে শহরে পানীয় জল সরবরাহ হয়। শুনেছি পুরসভার জমি বেদখল হচ্ছে। পুরসভার উচিত, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া। না হলে জমি বেদখল হতেই থাকবে।’’ শহরের আর এক বিরোধী কাউন্সিলরের কটাক্ষ, “কবে ঘুম ভাঙে সেটাই দেখার! রাস্তার দু’ধার দখল হয়ে যাচ্ছে। সেখানেও তো পুরসভা নিশ্চুপ!”
মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের অবশ্য আশ্বাস, “নান্নুরচকের জলপ্রকল্পের জমির ওই সমস্যার কথা শুনেছি। এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।” এক পুরকর্তার স্বীকারোক্তি, “আগামী দিনে এখানে প্রকল্পের সম্প্রসারণ হতে পারে। জমি বেদখল হলে তখন পরিকাঠামো নির্মাণে সমস্যা হতে পারে।”