স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে যাতে প্রসব হয়, সে জন্য সরকারি প্রচারের অন্ত নেই। প্রত্যন্ত এলাকায় মায়েদের হাসপাতালমুখী করতে স্বাস্থ্যকর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা হয়েছে ‘নিশ্চয় যান’-এর। সরকারি হাসপাতালে সন্তানের জন্ম হলে বিপিএল পরিবারের মহিলা ৫০০ টাকা এককালীন ভাতাও পান। এর পরেও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার যে সেই তিমিরেই, তার প্রমাণ পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই ব্লক সবং এবং পিংলা। পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় এখন যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ৯৩ শতাংশ, সেখানে সবংয়ে এই হার মাত্র ৪০ শতাংশ আর পিংলায় ৪১ শতাংশ। বাকি শিশুদের জন্ম হচ্ছে বাড়িতেই।
সবং ও পিংলায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার দেখে উদ্বিগ্ন জেলার একাংশ স্বাস্থ্যকর্তাও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বেড়েছে। তবে সবং- পিংলায় সমস্যা রয়েছে। ওই দুই ব্লকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।” স্বাস্থ্য দফতরের বলছে, গত দশ মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪৬,০০৮টি শিশুর জন্ম হয়েছে। ৪২,৯৩৭টি শিশু জন্মেছে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অন্য দিকে, এই দশ মাসে সবংয়ে যে ৫৪৫টি শিশু জন্মেছে, তার মধ্যে মাত্র ২২০টি শিশুর জন্মেছে কোনও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আর পিংলায় এই দশ মাসে ৫২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। তার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হয়েছে মাত্র ২১৩টি শিশুর।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানালেন, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, এলাকার একাংশ স্বাস্থ্যকর্মী, বিশেষ করে আশাকর্মী প্রসূতিদের বাড়িতে যান না। পাশাপাশি একাংশ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেহাল বলেও অভিযোগ। যদিও সবংয়ে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব আগের থেকে বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয় বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার। মানসবাবু বলেন, “সমস্যা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছি। নিশ্চয়ই সুরাহা করবেন।”