লক্ষ্মীপুজোর দিনে ডিঙি বেয়েই পারাপার। ঘাটালে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
লক্ষ্মীপুজোর সকালে নতুন করে ডুবল ঘাটাল পুর শহরের একাংশ। এই নিয়ে চলতি মরসুমে পাঁচবার জলমগ্ন হল ঘাটাল শহর। নতুন করে নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে শিলাবতী, ঝুমি নদীর বাড়ছিল। বুধবার সকালেই পুরসভার নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকে যায়। শাখা রাস্তাগুলিও ডুবে যায়। অনেকেই লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে বাড়ি পৌঁছোতে সমস্যায় পড়েন।
দুর্গাপুজো মাত্র দু’চার দিন আগেই শহরের নিচু এলাকাগুলি থেকে জল নেমেছিল। জলযন্ত্রণা ভুলে পুজোয় মেতেছিলেন দুর্গতরা বাসিন্দারা। দুর্গাপুজোর পরে লক্ষ্মী পুজোর প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু ফের টানা বৃষ্টি আবার সমস্যায় ফেলল ঘাটাল পুর এলাকার বাসিন্দাদের। বুধবার বিকালে ঘাটাল শহরের নেতাজি রোড-সহ একাধিক মূল রাস্তাতেও জল উঠে যায়। জলের তলায় চলে যায় অধিকাংশ রাস্তা।
পুরসভার ১ থেকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। ঘাটালের দেওয়ানচক ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কিছু গ্রামে শিলাবতী নদীর ভাঙা বাঁধে জল ঢুকে যায়। তবে ঘাটাল ব্লকের গ্রামীণ এলাকা সেভাবে জলমগ্ন হয়নি এখনও। জল বাড়লে অবশ্য ভাঙা বাঁধগুলি দিয়ে জল ঢুকে বেশ কিছু গ্রাম আবার জলমগ্ন হতে পারে বলে প্রশাসন জানাচ্ছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “নদীতে অল্প জল বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক। নিচু এলাকায় কিছু অংশে জল জমে গিয়েছে।”
গত দু’মাসে বার বার জলমগ্ন হওয়ার পরে ঘাটাল শহরের রাস্তাঘাটের দফারফা অবস্থা হয়েছে। বহু রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জল নামার পরে সবে বাজারও আগের মত চাঙ্গা হচ্ছিল। তার মধ্যেই এই ঘটনা।
এদিন পুর এলাকার শুকচন্দ্রপুর, আড়গোড়া, চাউলি, কিসমত রামচন্দ্রপুর, গড়প্রতাপনগর, সিংহপুর, শ্রীরামপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। অনেকে জল পেরিয়ে ডিঙিতে করে লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে যান। এলাকা জলমগ্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ও শুরু হয়। লক্ষ্মী পুজোর সকাল থেকেই দফায় দফায় লোডশেডিং হয়। ঘাটালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মালবিকা হালদারের ক্ষোভ, ‘‘জুলাইয়ের শেষ থেকে আমাদের বাড়ির চারপাশ প্রায় টানা জলবন্দি হয়ে রয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর দিনেও নিস্তার মিলল না। এইভাবে আর কত দিন!’’
ঘাটাল পুরসভার প্রশাসক বিভাস ঘোষ বলেন, “পুর এলাকার বেশ কিছু এলাকা নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়েছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।”