মেদিনীপুর কলেজ মাঠে চলছে বড় পর্দায় বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা দেখার প্রস্তুতি। শনিবার বিকেলে। —নিজস্ব চিত্র।
এ বলে বসার চেয়ার দেবো, ও বলে এলেই মিলবে চকলেট! শুধু বড় পর্দায় ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখানোর ব্যবস্থা রাখাই নয়। শুরু হয়েছে দর্শক টানার অদৃশ্য দৌড়ও! মেদিনীপুর শহর জুড়ে ক্রিকেট-উন্মাদনা এমনই।
মেদিনীপুরে অরবিন্দ স্টেডিয়ামে বড় পর্দায় ফাইনাল ম্যাচ দেখানোর ব্যবস্থা করেছে মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা (ডিএসএ)। ডিএসএ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সিএবি-র নির্দেশেই তাঁদের এই পদক্ষেপ। ডিএসএ-র আরও ঘোষণা, যাঁরা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসবেন, তাঁরা ফ্রিতে পাবেন জল, চা, বিস্কুট। বিনামূল্যে পাবেন চকলেটও। মাঠে দর্শক টানতেই এই ঘোষণা বলে অনুমান। সত্যিই কি তাই? জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সঞ্জীত তোরই বলছেন, ‘‘উৎসাহী মানুষজন আসবেন খেলা দেখতে। সবার জন্যই সামান্য জলযোগের ব্যবস্থা রাখছি। চকলেটও দেবো!’’
আজ, রবিবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। পুরসভা আগেই জানিয়েছিল, বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি মেদিনীপুরে বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করছে তারা। শহরের কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠে ওই আয়োজন করছে তারা। প্রোজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় ফাইনাল ম্যাচ দেখানো হবে। ঘটনাচক্রে, এর পরপরই ডিএসএ-র ওই ঘোষণা। ডিএসএ-র সম্পাদক বলছেন, ‘‘আমরা তো ফাইনাল দেখতে কলেজ মাঠেই যেতাম। সিএবি থেকে নির্দেশ এসেছে। তাই স্টেডিয়ামে বড় পর্দায় ফাইনাল দেখানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’’ জলযোগের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশও কি ওই সংস্থার? সঞ্জীত বলেন, ‘‘তা কেন হবে! ওটা আমাদের সিদ্ধান্ত। এত মানুষ খেলা দেখতে আসবেন। এটুকু বন্দোবস্ত করা যেতেই পারে!’’ শনিবার আবার পুর-কর্তৃপক্ষের ঘোষণা, কলেজ-কলেজিয়েট মাঠে এক হাজার চেয়ার থাকবে। পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ‘‘শহরে বেশ উন্মাদনা রয়েছে। আমরা মাঠে এক হাজার চেয়ারের ব্যবস্থা করছি। উৎসাহী মানুষজন এখানে এসে চেয়ারে বসেই খেলা দেখতে পারবেন।’’
এই শহরে ক্রিকেট উন্মাদনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, জগদ্ধাত্রী পুজোর উপলক্ষে প্রস্তাবিত রবিবারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিলের কথা ভাবছে ‘অগ্নিকন্যা’ ক্লাব। ওই জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে শহরের পঞ্চুরচকে। শনিবার তার উদ্বোধন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। পুজোর ক’দিনই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে এখানে। আজ, রবিবারও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, বুদ্ধ মণ্ডলরা বলছেন, ‘‘ভাবছি রবিবারের অনুষ্ঠান হয় স্থগিত রাখব, না-হয় কাটছাঁট করব। কারণ পুরো শহর ক্রিকেট-জ্বরে কাঁপছে। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে কতজন আসবে, সে নিয়ে সংশয় থাকেই। তাছাড়া, আমাদের ক্লাবের সবাইও তো ক্রিকেট-পাগল।’’ ভারত বিশ্বকাপ জিতলে রবিবার রাতে ফানুস ওড়ানোর পরিকল্পনাও করেছেন তাঁরা।
রবিবার তিনি মেদিনীপুরে উপস্থিত থাকছেন জানিয়ে শনিবার বিধায়ক জুন মালিয়াকে বলতে শোনা গিয়েছে, "আমাদের প্রিয় শহর মেদিনীপুর কিন্তু উৎসবের আনন্দে একেবারে মেতে উঠবে। আপনাদের সবার সঙ্গে দেখা হবে তো! আমার তো মনে হচ্ছে এ বার বিশ্বকাপ আমাদের।"