প্রতীকী ছবি।
পরিযায়ী পাখি শিকার করে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হল চার চোরাশিকারি। ধৃতদের কাছে থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি পাখি-সহ একটি বন্দুক। সোমবার সন্ধ্যায় পটাশপুর থানার আম্বি গ্রামের ঘটনা। ধৃতদের মধ্যে একজন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর পটাশপুর-১ ব্লকের নৈপুর পঞ্চায়েতের আম্বি গ্রামের বাসিন্দা রাধাকৃষ্ণ বেরার বাগানে প্রতি বছরই ভিড় করে পরিযায়ী পাখীরা। বাগান সংলগ্ন জলাশয়ে শীতের মরসুমে প্রচুর সাইবেরিয়ান পাখি আসে। বাগানের বড়ো বড়ো গাছের মগডাল ভরেল থাকে শামুকখোলে। কেউ যাতে তাদের বিরক্ত না করে সেদিকে কড়া নজর ষাটোর্ধ্ব রাধাকৃষ্ণ বেরা এবং তাঁর পরিবারের সদ্যারা। অভিযোগ তাঁদের নজর এড়িয়ে গত সোমবার সকালে একদল চোরাশিকারি বন্দুক দিয়ে শামুকখোল শিকার করে। ওইদিনই বিকেলে একই ভাবে চারজনের একটি চোরাশিকারির দল বাগানে ঢুকে বন্দুক দিয়ে দুটি শামুকখোল শিকার করে। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের সসিন্দা গ্রামে। রাধাকৃষ্ণবাবু এবং তাঁর দুই ছেলে এর প্রতিবাদ করলে চোরাশিকারীরা তাঁদের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এরপর চোরাশিকারিদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের বচসা শুরু হয়। খবর পেয়ে পটাশপুর থানার পুলিশ গিয়ে ওই চারজন চোরাশিকারিকে থানায় নিয়ে আসে। বেআইনি ভাবে বন্যাপ্রাণী হত্যার অভিযোগে রাতেই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদেরল নাম কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল, শান্তনু কুইলা, কিঙ্কর মণ্ডল ও তাপস কুমার ঘোষ। এদের প্রত্যেকের বাড়ি বেলদা থানার সসিন্দা গ্রামে। তাপস ঘোষ সসিন্দা হাইস্কুলের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক।
রাধাকৃষ্ণবাবুর অভিযোগ, ‘‘আগেও একাধিক বার ওই শিক্ষক বন্দুক দিয়ে পরিযায়ী পাখি শিকার করেছে। বাধা দিলেও তিনি তাতে কান দেননি। সোমবারও বন্দুক দিয়ে দুটি শামুকখোল মেরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বন্যাপ্রাণী আইনে বিলুপ্ত প্রাজাতির প্রাণী শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। সেখানে শিক্ষক হয়েও এই ধরনের কাজ করে আরও বেশি অপরাধ করেছেন ওই ব্যক্তি।’’
এবিষয়ে পটাশপুর-১ ব্লকের জীববৈচিত্র কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘সরকার যেখানে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছে। সেখানে এই ধরনের লোকজন মাংসের লোভে নিরীহ বিপন্ন প্রাণীদের হত্যা করছে। অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরেই রাতে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।