প্রতীকী ছবি।
গতিবিধি বদলাচ্ছে হাতির। আগে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে দলমা থেকে বড় হাতির পাল রাজ্যে আসত, আবার সময় হলে ফিরেও যেত তারা। এখন অবশ্য বড় দল ভেঙে হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট দলে। ফলে হাতি খেদাতেও বাড়ছে সমস্যা। হাতির পথের হদিস পেতে এ বার দু’টি হাতিকে ট্রাঙ্কুলাইজ করে রেডিওকলার বসানো হবে।
কর্নাটকের বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স’-এর উদ্যোগেই হাতিদের উপর নজরদারি চালাতে রেডিওকলার লাগানো হবে। কলকাতার বন্যপ্রাণ শাখার টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সুব্রত পাল চৌধুরী জানান, ১৯৯৫-৯৬ সালে দক্ষিণবঙ্গে ‘ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া’-র উদ্যোগে দক্ষিণবঙ্গে একটি হাতির গলায় রেডিওকলার লাগানো হয়েছিল। তার থেকে তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বার ‘ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স’-এর উদ্যোগে হাতির শরীরে রেডিওকলার লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন দফতরের মেদিনীপুর বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে বন্যপ্রাণ শাখার বিশেষজ্ঞদের দল আসবে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাল, বুধবার দু’টি হাতির শরীরে রেডিওকলার লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’
বনকর্তারা জানাচ্ছেন, বছর কয়েক আগেও হাতির একটি বা দু’টি বড় দল (৭০-৮০টি হাতির দল) দলমা থেকে রাজ্যে আসত। দু’-একমাস থাকার পরে তারা এক সাথেই ফিরে যেত। গত কয়েক বছরে হাতির যাতায়াতে মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এখন হাতিরা একাধিক দলে ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। কখনও একসাথে মিলিত হচ্ছে। কয়েকদিন থাকার পর আবার ভাগ হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এতে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়ছে। ফিরে যাওয়ার সময়ও হাতিগুলি একসাথে ফিরছে না।
বন দফতর সূত্রে খবর, রেডিওকলার লাগানোর তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে। চাঁদড়ায় ১২টি হাতির দলের উপর নজর রাখা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে দু’টি কুনকি হাতি আনা হবে। হুলাপার্টির দলও তৈরি রাখা হয়েছে। এক বনকর্তা জানান, হাতিগুলি আসার সময় বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে আসছে। ফিরে যাওয়ার সময়ও বিভিন্ন ভাগে ভাগে ফিরে যাচ্ছে। ফেরার পর তারা দলমা পর্যন্ত যাচ্ছে কিনা, সারা বছর কোথায় থাকছে তার তথ্য আমারা জানতে পারছি না। হাতির এই গতিপথ পরিবর্তনের সঠিক তথ্য পেতেই রেডিওকলার বসানো হচ্ছে।