সেই পাঁচজন। নিজস্ব চিত্র
শনিবার রাত তখন প্রায় আটটা। বিট অফিসে খবর গিয়েছিল, স্থানীয় জঙ্গলে আগুন লেগেছে। দ্রুত এলাকায় পৌঁছেছিলেন বন দফতরের কেশিয়াড়ি বিট অফিসের পাঁচ কর্মী। তারপর কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, হাতের কাছে যা পেয়েছেন— তাই দিয়েই আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন তাঁরা। প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানোর পর, সাধারণ মানুষের কাছে তাঁদের আর্তি— ‘দয়া করে জঙ্গলে আগুন লাগাবেন না’!
কেশিয়াড়ি বিট অফিসের পাঁচ কর্মী প্রভাস সিংহ, স্বপন বাগদি, বুধন হেমব্রম, বিপ্লব মুদলি, সৌমিক কুইলা— যে ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কোনও রকম নিরাপত্তা উপকরণ ছাড়াই আগুন নেভাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তার প্রশংসা করছেন স্থানীয় অনেকেই। স্থানীয়রা বলছেন, ‘‘ওঁরাই প্রকৃত হিরো। ওঁরা তৎপর না হলে, আগুন আরও ছড়াতে পারত।’’ জানা যাচ্ছে, আগুন লাগার খবর পেয়ে শনিবার রাত আটটা নাগাদ অর্জুনগেড়িয়ার জঙ্গলে পৌঁছন বন দফতরের ওই পাঁচ কর্মী। আগুন ছড়িয়ে পড়া রুখতে তাঁরা প্রথমে গাছের ডালপালা ভেঙে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তারপর শুকনো পাতা সরিয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ার পথে বাধা সৃষ্টি করেন তাঁরা। কোনও রকম নিরাপত্তা উপকরণ ছাড়াই তাঁদের এই কাজ করতে হয়। বনকর্মী প্রভাস সিংহ বলেন, ‘‘বনকে রক্ষা করাই তো আমাদের কাজ।’’ বনকর্মী স্বপনকুমার বাগদির কথায়, ‘‘আমরা সব সময় চেষ্টা করি যাতে আগুন নেভানো যায়। তাই কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিতেই হয়।’’
বন দফতর জানাচ্ছে, আগুন নেভাতে নেই পর্যাপ্ত ফায়ার ব্লোয়ার। ফলে একসঙ্গে একাধিক জঙ্গলে আগুন লাগলে ফায়ার ব্লোয়ার ব্যবহার সম্ভব হয় না। আর আগুন বিধ্বংসী হলে দমকল ডাকতে হয়। খড়্গপুর ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, ‘‘অনেক সময় ঝুঁকি নিতে হয় কর্মীদের। তাঁদের কাজের সুবিধায় ফায়ার ব্লোয়ার দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সেফটি জ্যাকেটও দেওয়া হবে।’’