রানিচকে পরিযায়ী পাখির দল। —নিজস্ব চিত্র।
কারখানা-বন্দরের শহরেও রয়েছে বিশালাকার জলাশায়। আর সেখানেই শীতে আসছে পরিযায়ী পাখির দল। তবে সেই পাখিদের চোরাশিকার নিয়ে চিন্তা রয়েছে বন দফতরের। পাখি না ধরা এবং তাদের বিরক্ত না করার জন্য পোস্টার লাগানোর পাশাপাশি, সচেতনতা মূলক প্রচার করা হচ্ছে।
শিল্প শহর হলদিয়া বন্দরের জিসি বার্থের কাছে রয়েছে দুটি বিশাল আকারের জলাশয়।হলদিয়া শহরের প্রবেশের মুখেই রাস্তা থেকে জলাশয় দু’টি দেখা যায়। শীতে এখানেই আসে হাজারে হাজারে পাখির ঝাঁক। সন্ধ্যা হলেই তাদের ভিড় জমে। পাশেই বন্দরের ক্রেনের আওয়াজ, ট্রেনের ওয়াগনের বিকট শব্দের মধ্যেও শান্তি খুঁজে নিয়ে এত সংখ্যক পাখি এই জলাশয়ে ঘর বাঁধে। জেলায় আসা পরিযায়ী পাখি নিয়ে গবেষণা করেছেন খেজুরি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অসীম কুমার মান্না। তিনি জানাচ্ছেন, হলদিয়ার রানিচক-সহ জেলার কানাইচট্টা, নীচ কসবা, তাজপুর সহ নানা জায়গায় পরিযায়ী পাখি আসে। এর মধ্যে ছোট সরাল, বড় সরাল, পান কৌড়ি, মানিক জোড়, শামুখ খোর, কয়েক জাতের বালুবাটান, টিল হাঁস, হুট্টিটি, বাগচা, গাই বগলা, গো বক, খঞ্জনা রয়েছে। দেখা মিলছে হরিয়ালেরও। যারা আসে পশ্চিম মেদিনীপুর, ছোটনাগপুর এলাকা থেকে।
স্থানীয় পক্ষীবিদদের দাবি, রানিচকে গত বছর শীতে হাজার পাঁচেক মতো পাখি এসেছিল। আসলে চাষের পরে মাঠের ফড়িং, ল্যাদা পোকা, ব্যাং, উচ্চিংড়ে, চিতি কাঁকড়ার খায় পাখিরা। হলদিয়া জনবহুল। এখানে জলাশয় থাকার সুবিধা রয়েছে পাখিদের কাছে। কারণ, মানুষজন নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকে। অকারণে পাখিদের জ্বালাতন করার লোক কম। কিন্তু এই পাখিদের লোভে শিকারীরাও আসছেন বলে অভিযোগ উঠছে। স্থানীয় পরিবেশ কর্মী সুপ্রিয় মান্না, মানিক ভুঁইয়ার দাবি, ‘‘পাখি শিকারিরা আসছেন এই এলাকায়। নিয়মিত নজরদারি দরকার।’’ এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের রেঞ্জার দীপক মণ্ডল বলেন, ‘‘সিপিটি-র এই জলাশয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে পরিযায়ী পাখি আসে। পাখি যাতে না ধরা হয় বা ওদের বিরক্ত না করা হয়, সে জন্য নজরদারি চালানো হচ্ছে। ওই এলাকায় সচেতনতা মুলক পোস্টার লাগানো হয়েছে। ওখানে পাখির গণনাও করা হবে।’’