প্রতীকী ছবি।
হাতির হানায় মৃত্যু হলে আর্থিক সাহায্যের সঙ্গে পরিবারের একজনের চাকরি দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণায় আশার আলো দেখছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বহু পরিবার। তবে একই সঙ্গে রয়েছে সংশয়ও। তৎপরতা শুরু হয়েছে জেলা প্রশাসনেও।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রতিবছর হাতির আক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যাটা কম নয়। আগে হাতির হানায় কেউ মারা গেলে তাঁর পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিত সরকার। পরে সেটা বাড়িয়ে আড়াই লক্ষ করা হয়। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৪ লক্ষ টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো এ বার সেই আর্থিক সাহায্যের সঙ্গে চাকরিও মিলবে। খড়্গপুরের মঞ্চ থেকে হাতির হানায় মৃত একজনের স্ত্রীর হাতে বিশেষ হোমগার্ডের চাকরির প্রস্তাবপত্রও দিয়েছেন তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সরকারের সিদ্ধান্তে খুশি ওয়েস্ট বেঙ্গল সাব অর্ডিনেট ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশন। সংগঠনের রূপনারায়ণ বিভাগের সভাপতি বাবলু মাণ্ডি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে হাতির হানায় মৃত অনেক পরিবার উপকৃত হবে।’’
কিন্তু এর আওতায় কারা আসবেন সেই নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। জেলা বন দফতরের এক আধিকারিকের প্রশ্ন, প্রতি বছরই এই জেলায় হাতির হানায় একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এক্ষেত্রে আগের মৃত্যুও কী ধরা হবে? নির্দিষ্ট সরকারি নির্দেশ না বেরোলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে না বলেই মনে করছেন ওই আধিকারিক। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহও বলেন, ‘‘তবে এই সুবিধা বিগত বছরগুলিতে হাতির হানায় মৃতদের পরিবারগুলিও পাবেন কি না, সেটা সরকারি নির্দেশ না আসলে বলা যাবে না।’’ সংশয় থাকায় অনেক পরিবার বিশেষ হোমগার্ড পদে চাকরির জন্য কোথাও আবেদন করতে হবে সেটাও অনেক পরিবার বুঝতে পারছেন না।
হাতির হানায় মৃতের আত্মীয় গোয়ালতোড়ের শ্যামল হেমব্রম, শালবনির চাঁপা মাহাতোরা বলেন, "সরকার থেকে চাকরি দিলে তো ভালোই হয়। তবে কোথায় কী আবেদন করতে হবে, তা তো কেউ জানায়নি।’’
সরকারি নির্দেশ না এলেও তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে বন দফতরে। পুরানো ফাইল ঘেঁটে মৃতদের তালিকা খোঁজা হচ্ছে। বন দফতরের মেদিনীপুর ডিভিশনের ডিএফও সন্দীপ বেরওয়াল বলেন, ‘‘মৃতদের পরিবারদের তালিকা দেখা হচ্ছে।’’ রূপনারায়ণ ডিভিশনের এডিএফও তিয়াস ভঞ্জ জানান, সরকারি নির্দেশ মেনেই এই প্রক্রিয়া চলবে।