ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজের এলাকায় আবার ভাঙন। একের পর এক কাউন্সিলর এবং কর্মী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। ফলে তাঁর পক্ষে কাঁথি পুরসভা ধরে রাখা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ১৬ জন কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফের তৃণমূলে যোগ দেন। এই কাউন্সিলররা প্রত্যেকেই শুভেন্দুর দীর্ঘদিনের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা কাঁথি পুরসভা পরিচালন কমিটির সদস্য উত্তম বারিক। তিনি আরও জানান, এখন দু’জন যোগ দিলেন। তাঁরা হলেন অতনু গিরি এবং তরুণ বেরা। বাকি তিন জন কাজের কারণে আসতে পারেননি।
উত্তম বলেন, “কাঁথি পুরসভার যে সব কাউন্সিলর নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা ফের তৃণমূলে যোগদানের জন্য আবেদন করেছিলেন। দলের নির্দেশে পাঁচ কাউন্সিলরকে যোগদান করালাম। তৃণমূলের উন্নয়নে শামিল হতে আবার যোগ দিলেন তাঁরা। কাঁথি পুরসভার জয় শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।”
সদ্য যোগদানকারী প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর অতনু গিরি বলেন, “২০২১ সালের ১ জানুয়ারি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখলাম দলে কাজ করার মতো কোনও পরিস্থিতি নেই। ওই দল করলে মানুষের পাশে থাকা যাবে না। বিজেপি শুধুমাত্র ধর্ম ধর্ম করে চলছে। হিন্দু-মুসলিম মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। ওই দলের মানসিক ভাবে যেতে পারিনি। শরীরটা গিয়েছিল কিন্তু মন পড়ে ছিল দিদির কাছেই।”
কাউন্সিলরদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
তিনি অধিকারী পরিবারের উদ্দেশে কটাক্ষের সুরে বলেন, “আগামী পুরনির্বাচনে বিজেপি-কে কাঁথি শহর থেকে উৎখাত করে দেব। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে থাকার কারণে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলাম । শুভেন্দু অধিকারী আমাদের এত দিন ব্যবহার করেছেন। কোনও কাজ করার সুযোগ দেননি। শুভেন্দুর প্রতি আবেগ পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পেরেছি আমরা।”
পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “ওঁদের জন্য শুভেচ্ছা রইল। অতনুবাবু নাকি উৎখাত করবেন বলেছেন। আমরা উৎখাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। গণতান্ত্রিক ভাবে, সুষ্ঠু ভাবে আমরা কাঁথি পুরসভার ভোট করাব। পুরসভা দখল করবে বিজেপি। দীর্ঘদিন ধরে কাঁথি পুরসভার উন্নয়ন থমকে রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “নেতারা গেলেও কর্মীরা আমাদের পাশে রয়েছেন।”