Junput Missile Launch Pad

কলেজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র, প্রশ্ন অনেক

২০০৭ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার দক্ষিণ কাঁথি এলাকায় পলিটেকনিক কলেজ এবং আইটিআই কলেজ বানায়। কাঁথি শহরের অদূরে গড়ে ওঠে দুরমুঠ দেশপ্রাণ কলেজ।

Advertisement

কেশব মান্না

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ০৮:২৩
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মেডিক্যাল, মহিলা কলেজের প্রতিশ্রুতি পূরণ কয়েক দশকেও হয়নি। তা নিয়ে এলাকাবাসীর কোথাও যেন চাপা ‘ক্ষোভ’ রয়েছে রাজ্য সরকারের উপরে। আবার সম্প্রতি এই বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তেও মুখভার এলাকার মৎস্যজীবীদের। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভায় তাই রাজ্যের শাসক-বিরোধী উভয় দলই প্রচারে এলাকাবাসীর অল্পবিস্তর প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। যদিও গত বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল লক্ষ্য করলে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি কিছুটা হলেও দাবিয়ে রেখেছে তৃণমূলকে।

Advertisement

২০০৭ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার দক্ষিণ কাঁথি এলাকায় পলিটেকনিক কলেজ এবং আইটিআই কলেজ বানায়। কাঁথি শহরের অদূরে গড়ে ওঠে দুরমুঠ দেশপ্রাণ কলেজ। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, মহিলাদের জন্যও পৃথক কলেজ গড়া হবে। ২০১১ সালে রাজ্যের রাজনৈতিক পালাবদলের পর সেই কাজ এগোয়নি। এদিকে, এই এলাকা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সে সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কাঁথি মহকুমা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে।বর্তমানে অবশ্য তমলুক জেলা সদর হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত করেছে রাজ্য সরকার।

দীর্ঘ দেড় দশক ধরে কাঁথি লোকসভায় ক্ষমতা রয়েছে অধিকারী পরিবার। এখন তাঁদের প্রায় সকলেই বিজেপিতে, না হলে বিজেপির গুণগান গাইছেন। এমন আবহে তৃণমল এবং কংগ্রেস অধিকারী পরিবারের উপরেই দোষ চাপাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকলেও অধিকারীরা ওই এলাকায় মহিলাদের জন্য পৃথক কলেজ গড়ে তোলার চেষ্টা করেনি। কংগ্রেসের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি মানস কর মহাপাত্র বলছেন, ‘‘দশকের পর দশক ধরে সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী হয়েছেন। অথচ পরিবারের কেউই কাঁথিতে মেডিক্যাল কলেজ এবং মহিলা কলেজ গঠনের ব্যাপারে উদ্যোগী হননি।’’ সিপিএমের নেতা ঝাড়েশ্বর বেরার অভিযোগ, ‘‘শুভেন্দুবাবুরা চক্রান্ত করে কাঁথি থেকে মেডিক্যাল কলেজকে তমলুকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।’’

Advertisement

গত লোকসভা ভোটে কাঁথি থেকে তৃণমূলের প্রার্থী শিশির অধিকারী জিতলেও গত বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ কাঁথি এলাকায় বিজেপি ক্ষমতা বাড়িয়েছে। বিধায়ক হয়েছেন বিজেপির অরূপ দাস। আর পঞ্চায়েত ভোটে অধিকাংশ পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিও বিজেপির দখলে। তবে বিজেপির গলাতেও এই এলাকা থেকে একটি কাঁটা রয়েছে। তা হলে জুনপুটের ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র। কেন্দ্রের ‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে’র কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিয়েছে রাজ্য সরকার। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের দিন এলাকার মৎস্যজীবীদের সেখান থেকে সরে যেতে হবে বলে প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। তাই এর বিরোধিতায় আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।

ইতিমধ্যে এই বিষয়টিকে নিয়ে স্থানীয় এলাকায় প্রচার শুরু করেছে এসইউসি। যদিও কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী এ ব্যাপারে বলছেন, ‘‘তৃণমূলের একাংশ ওখানের স্থানীয়দের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন করছেন। ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র তৈরি হবে নিয়ম মেনেই। এতে স্থানীয়দের কোনও ক্ষতি হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement