বৃষ্টির অভাবে সামুদ্রিক মাছে টান, সঙ্কটে মৎস্যজীবীরা

দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণব কর বলেন, ‘‘গত ২০-২৫ বছরে আষাঢ়ের শেষে দিঘা মোহনায় এমন  মৎস্য সঙ্কট দেখা যায়নি।  আর এর কারণ বৃষ্টি না হওয়া। ফলে মাছের দেখা নেই মোহনার বাজারে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৫
Share:

জোগান নেই। সুনসান দিঘা মোহনার মাছবাজার। নিজস্ব চিত্র

ঘড়িতে সকাল আটটা। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক মৎস্য নিলাম কেন্দ্র ও বাজার দিঘা মোহনা কার্যত সুনসান। দু’একজন ব্যবসায়ী ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আষাঢ় মাসের শেষে দিঘা মোহনায় মাছ বাজারের এমন ছবি শেষ কবে দেখা গেছে তা মনে করতে পারলেন বহু বছর ধরে এখানে মাছের ব্যবসা করা অনেকেই। এমনকী যাঁরা এই বাজারে মাছ নিয়ে আসেন সেই মৎস্যজীবীরাও।

Advertisement

এমন অবস্থা কেন?

এ ব্যাপারে মৎস্যজীবী থেকে মাছ ব্যবসায়ী সকলেই একবাক্যে জানাচ্ছেন, বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে ইলিশ তো বটেই, সমুদ্রের অন্যান্য মাছের তেমন আমদানি নেই দিঘা মোহনায়। তার উপর গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকার জন্য মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তাই বেশিরভাগ ট্রলারই মাছ ধরতে যেতে পারেনি। বুধবার সকাল থেকে কিছু ট্রলার অবশ্য মাছ ধরতে সমুদ্রে রওনা দিয়েছে বলে মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে বর্তমানে দিঘা মোহনায় মাছের বাজার মন্দা। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণব কর বলেন, ‘‘গত ২০-২৫ বছরে আষাঢ়ের শেষে দিঘা মোহনায় এমন মৎস্য সঙ্কট দেখা যায়নি। আর এর কারণ বৃষ্টি না হওয়া। ফলে মাছের দেখা নেই মোহনার বাজারে।’’

Advertisement

মৎস্যজীবীরা জানান, গত বছর এই সময়ে প্রচুর ইলিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ উঠেছিল। সেই তুলনায় এবার দিঘা মোহনার বাজার অনেকটা খাঁ খাঁ করছে। দিঘা মোহনাকে কেন্দ্র করে শংকরপুর থেকে লরিতে মাছ নিয়ে আসা, সেখানে মাছ নিলামের পর লরিতে করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর কাজে বহু মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত। মন্দার বাজারে তাঁরা এখন কার্যত বেকার হয়ে পড়েছেন।

সুমন বর নামে এক মৎস্যজীবী বলেন, “এমন আবহাওয়া চলতে থাকলে সমুদ্রে জালে মাছ পড়ার আশা আরও কমে যাবে। তা ছাড়া এই বছর এখনও দিঘা ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টিও সে ভাবে হয়নি। ফলে সমুদ্রে ট্রলার নিয়ে গেলেও তেমন মাছ মিলছে না।’’

দিঘা মোহনার অন্যতম মৎস্য ব্যবসায়ী রাখাল জানা বলেন, “সমুদ্রে মাছ ধরার ব্যান পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর একেবারে শুরুতে কিছুটা মাছ হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে মাছের তেমন দেখা নেই। এই অবস্থায় ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া বাজারেও এর ফলে সামুদ্রিক মাছের জোগান কমে যাবে।’’

এই পরিস্থিতিতে মৎস্যজীবী থেকে মাছ ব্যবসায়ী সকলেই চাইছেন বৃষ্টি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement