বাজিতে জখম চোখ।
বাজি কী ভাবে ফাটাবেন, বাজিতে জখম হলে কী করা উচিত সে সব নিয়ে প্রতি বছর পুলিশ থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রচার করে। কিন্তু তাতে কতটা কাজ হয়, মঙ্গলবার কালীপুজোর রাতে হলদিয়ায় আতসবাজিতে একাধিক শিশু থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষাথীর জখম হওয়ার ঘটনা সেই প্রশ্ন তুলে দিল।
মঙ্গলবার গভীর রাত থেকেই হলদিয়ার চৈতন্যপুর বিবেকান্দ মিশন নেত্র নিরাময় নিকেতনে বাজিতে জখম হওয়া মানুষজন ভিড় করতে শুরু করেন। আহতদের বেশিরভাগই ছিল শিশু ও কিশোর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সকাল থেকেই জরুরি বিুভাগে সেই ভিড় আরও বাড়তে শুরু করে। হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেকটর অসীম শীল জানান, অনন্ত ১২ থেকে ১৪ জন এসেছেন, বাজি পোড়াতে গিয়ে যাঁরা চোখে আঘাত পেয়েছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেরই চোখের কর্নিয়া জখম হয়েছে। একজনের আই বল ফেটে গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুতাহাটার গোবিন্দপুরে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আশুতোষ মাল তুবড়ি ফেটে জখম হয়। তার চোথ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেউলপোতা হাইস্কুলের ওই ছাত্রে র মামা গুরুপদ বর্মণ বলেন, ‘‘একটি বড় তুবড়ি জ্বালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। তুবড়ির ফুলকি সরাসরি আশুতোষের চোখে আঘাত করে।’’ বাজির আগুনে চোখের ক্ষতি হয়েছে দুর্গাচকের কিশোর ভোলা দাসের, সুতাহাটার বাসিন্দা স্কুলছাত্রী মাধুরি জানার। বাজির আগুন ছিটকে এসে জখম হয়েছে দুর্গাচকের সাড়ে চার বছরের সোমদীপ সাহু, দশ মাসের শিশু শুভ্রা মণ্ডল। বাসুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুমি দাস নামে এক তরুণী শব্দবাজিতে জখম হয়েছেন।
বাজিতে শিশু-কিশোরদের জখন হওয়ার ঘটনায় মূলত তাদের এবং অভিভাবকদের সচেতনতাকেই দায়ী করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, বাজি ফাটানোর সময় বাচ্চাদের উপযুক্ত পোশাক এবং একেবারে সামনে থেকে বাজি ফাটানোর ক্ষেত্রে বহু অভিভাবকই সচেতন নন। এমনও দেখা গিয়েছে মা ছেলেকে কোলে নিয়ে ফুলঝুরি জ্বালাচ্ছেন। এ সব ক্ষেত্রে ফুলঝুরির ফুলকি থেকে বাচ্চার আঘাতের সম্ভাবনা থাকে।
চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অসীম শীল বলেন, ‘‘প্রতি বছর বাজিতে জখম হয়ে অনেকেই আসেন। আমরা চাইছি বাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে মানুষ আরও সচেতন হোন। বিশেষ করে শিশু ও কিশোররা। অভিভাবকদেরও তাদের সচেতন করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া উচিত। তা না হলে এই ধরনের বিপদ আরও বাড়বে।’’