স্বাভাবিক থাকল খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া সাপের ছোবলে অসুস্থ রোগীকে ভর্তি নিল খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল।
বুধবার ভোরে বাড়িতেই সর্পদষ্ট হন নারায়ণগড়ের মকরামপুরের বাসিন্দা অজিত মিশ্র। তাঁকে চিকিৎসার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে যাওয়া হয়। কিন্তু এ দিন সেখানে প্রায় কোনও কাজই হয়নি। বাধ্য হয়ে তাঁকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সরা তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন।
এই খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালেই বহুবার চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। গত নভেম্বরেই তৃণমূলের এক মহিলা কর্মী এই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বরিষ্ঠ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ ঘোড়ইকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। ওই চিকিৎসক ইস্তফা দেন। পরে তিনি কাজে যোগ দিলেও আতঙ্ক কাটেনি। গত ডিসেম্বরে তিন মাসের নোটিসে ফের ইস্তফার আবেদন জানান তিনি। তার পর থেকে চিকিৎসক সঙ্কটে ভুগছে হাসপাতাল। এ দিন সেই হাসপাতালেই ধরা পড়েছে অন্য ছবি। বহির্বিভাগ ছিল সচল। অন্তর্বিভাগেও চিকিৎসকেরা ছিলেন। সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চিকিৎসক বন্ধুদের আন্দোলনে নৈতিক সমর্থনও রয়েছে। কিন্তু ধর্মঘটে সুফল মেলে না। তাই চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করিনি।”
ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালও এ দিন সচল ছিল। খোলা ছিল বহির্বিভাগ। তবে রোগীর সংখ্যা ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। এই হাসপাতালেও চিকিৎসক নিগ্রহের পুরনো ইতিহাস রয়েছে। ডেবরার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আরিফ হাসান বলেন, “আমাদের বহির্বিভাগ অন্যদিনের মতোই খোলা রয়েছে। তবে ধর্মঘটে ভোগান্তির আশঙ্কা এ দিন ভিড় অনেক কম ছিল।’’ অন্য দিন যেখানে প্রায় ৪০০ রোগী আসে এ দিন সেখানে মাত্র ২০-২২ জন রোগী এসেছিলেন বলে জানান তিনি। সবংয়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পার্থসারথী কয়াল বলেন, “আমরা চিকিৎসকদের আন্দোলনের পক্ষে। মানুষের দুর্ভোগ চাই না।”
ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল-সহ এই মহকুমার গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে স্বাভাবিক পরিষেবা চালু ছিল। খোলা ছিল বহির্বিভাগ। রোগীর সংখ্যাও ছিল অন্য দিনের মতোই। অনেক চিকিৎসক কালো ব্যাজ পড়ে কাজ করেন। ঘাটাল হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “কলকাতার যা হয়েছে তা নিন্দনীয়। কিন্তু আমরা রোগীদের পরিষেবা দিতে দায়বদ্ধ।’’ গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতাল, গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালেও এ দিন স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। চন্দ্রকোনা রোডের দ্বারিগেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও রোগীর সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল।
কর্মবিরতির পথে না হেঁটে কেশিয়াড়ি, বেলদা, দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালেও পরিষেবা চালু ছিল। নারায়ণগড় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সব পরিষেবা চালু ছিল।’’ কেশিয়াড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তরণীকুমার শীট জানান, সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে খোলা রাখতে বলা হয়েছিল। তবে মারধর কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।