সাধন পাণ্ডে।
এখনও সরকারি অনুদান মেলেনি বলে খোদ মন্ত্রীর কাছেই অভিযোগ করলেন স্বসহায়ক দলের কয়েকজন মহিলা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা ভবনের উদ্বোধন করতে শুক্রবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন বিভাগীয় মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। সেখানেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তাঁকে। ওই সদস্যদের আশ্বস্ত করে মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনাদের দলের কাছে অনুদান পৌঁছনোর দায়িত্ব আমার।’’
এদিন মঞ্চে মন্ত্রী বলেন, ‘‘পুজোর পরে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে ৫০০ কোটি টাকা দিলেন। সব স্বসহায়ক দলকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য। টাকাটা সব দলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে।’’ সেই কথা শেষ হওয়ার পরেই স্বসহায়ক দলের কয়েকজন সদস্য উঠে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, তাঁরা এখনও ওই অনুদান পাননি।
এরপরেই মঞ্চে উপস্থিত জেলাশাসক রশ্মি কমল, অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রতিমা দাস, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহরা একে অপরের দিকে তাকান। তখন অতিরিক্ত জেলাশাসককে দেখিয়ে মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা ওঁকে চেনেন তো? জানেন উনি কোথায় বসেন? ওঁর কাছে যাবেন।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহও ওই মহিলাদের সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বই নিয়ে সোমবার জেলা পরিষদে আসতে বলেন। সরকারি অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করতেও দেখা যায় উত্তরাকে। তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘আমার মনে হয় আমাদের সরকার যে পরিষেবা দিচ্ছে তাতে কোনও প্রশ্ন কিংবা জিজ্ঞাসা থাকার কথা নয়।’’
স্বসহায়ক দলের ওই মহিলাদের ভিড়ে ছিলেন শেফালি রানা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিজে থেকে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে যাইনি। মঞ্চে উনি বলছিলেন, সব স্বসহায়ক দলের অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা করে চলে গিয়েছে। কিন্তু আমরা তো টাকাটা পাইনি। মন্ত্রীকে সেটাই জানিয়েছি।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের সাফাই, ‘‘নথিভুক্ত স্বসহায়ক দল, যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে এবং নিজেদের সদস্যদের মধ্যে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তাদেরই এই আর্থিক অনুদান পাওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে দেখা হচ্ছে।’’
মেদিনীপুরের অনুষ্ঠানে তিনি জানান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এখন ৪০ হাজার স্বসহায়ক দল আছে। সেটাকে দ্বিগুণ করতে হবে। এদিন সবংয়ের বারজীবনে কিসান মান্ডিতে জেলা সবলা মেলার সূচনা অনুষ্ঠানে এসেও সেই কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে ১০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে মাত্র ৪০ হাজার গোষ্ঠী। ৮০ হাজার হলে খুশি হতাম।”
সরকারি অনুষ্ঠান হলেও সেখানে দলীয় প্রচারও করেন সাধন। সবংয়ের মঞ্চে তিনি বলেন, ‘‘জেলার সব বিধানসভাতেই যাতে আমরা জিততে পারি তার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনাকে এখানেও রূপায়ণ করতে হবে।”