পসরা-সাজিয়ে: হলদিয়া মেলায় কেশর, বাদাম, শুকনো ফলের স্টলে আফগান তরুণীরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
‘যেমন কথা তেমন কাজ’! কথা রেখেছেন পুরপ্রধান।
হলদিয়া মেলায় ঘুরতে আসা অনেকের মুখেই শোনা যাচ্ছে এমন মন্তব্য। আর এই মন্তব্যের কারণ পুরোপুরি প্লাস্টিক মুক্ত হলদিয়া মেলা এলাকা।
মেলা শুরুর আগে থেকেই পরিবেশ দূষণ রোধের বিষয়টিতে সচেতন ছিল মেলা কমিটি। প্রস্তুতি পর্বেই এই এলাকা প্লাস্টিক মুক্ত হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন হলদিয়ার পুরপ্রধান তথা হলদিয়া মেলা কমিটির সম্পাদক শ্যামল কুমার আদক। সেই মতোই মেলাপ্রাঙ্গণে প্লাস্টিক বা থার্মোকল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মেলার কোনও দোকানেই প্লাস্টিক বা থার্মোকলের থালা-বাটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন পুর এলাকার বাসিন্দাদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, যদিও ১০ দিনের মেলাকে যদি প্লাস্টিকমুক্ত রাখা যায় তা হলে হলদিয়া পুর এলাকাকে কেন প্লাস্টিকমুক্ত করা যাবে না। তাঁদের দাবি, পুরসভাকেই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। প্লাস্টিক, থার্মোকল রুখতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে জরিমানা চালু করার দাবিও তুলেছেন পরিবেশপ্রমীরা।
হলদিয়া মেলাকে প্লাস্টিকহীন করার বিষয়ে পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মেলা কমিটির পক্ষ থেকে একটি নজরদারি দল তৈরি করা হয়েছে। দিনভর যখন-তখন মেলাপ্রাঙ্গণে পরিদর্শন চালাচ্ছেন নজরদারি কমিটির সদস্যরা। যাতে দর্শকরা ডাস্টবিন ব্যবহার করেন সে বিষয়ে সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিবেশ দূষণ রোধ এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে।
মেলার শুরুর দিকে প্রথমে কিছু দোকানদার থার্মোকল বা প্লাস্টিকের থালা এবং বাটি ব্যবহার করছিলেন। পরে মেলা কমিটি থেকে এই প্লাস্টিক বা থার্মোকলের থালা বাটি ব্যবহার করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি প্লাস্টিক, থার্মোকল সরিয়ে শালপাতা ও কাগজের থালা বাটি ব্যবহার শুরু করেন দোকানদারেরা। মেলা কমিটির এই উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি বাসিন্দারা।
পুর এলাকায় প্লাস্টিক, থার্মোকলের বিরুদ্ধে অভিযান না থাকার অভিযোগ পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, পুর এলাকা জুড়ে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হলদিয়ার উপ-পুরপ্রধান সুধাংশু শেখর মণ্ডল বলেন, ‘‘মেলা শুরুর আগেই প্রস্তুতি পর্বে মেলায় কোনও প্লাস্টিক ব্যবহার হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত মতো কাজ হচ্ছে। ধীরে ধীরে গোটা পুর এলাকা প্লাস্টিক ‘ফ্রি জোন’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কড়া পদক্ষেপ করা পুরসভার তরফে।
মেলা দেখতে এসেছিলেন হলদিয়ার বাসিন্দা রূপম দাস। তিনি বলেন, ‘‘মেলায় প্লাস্টিক ব্যবহারের বিষয়ে এত কড়াকড়ি দেখে ভাল লাগছে। কিন্তু গোটা পুর এলাকায় যদি একই ব্যবস্থা নেওয়া হত, তা হলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা অনেকটাই কমানো যেত। তবে প্লাস্টিক ব্যবহার না করার ক্ষেত্রে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’’