পুরনো ঝাড়গ্রামে খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের উৎকর্ষতা কেন্দ্র।
ঝাড়গ্রাম কালীপুজোর পরের সপ্তাহ থেকে ঝাড়গ্রামে চালু হচ্ছে ‘আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্ট ট্যুরিজম’।
পর্যটন দফতর স্বীকৃত ‘ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম সংস্থা’-র উদ্যোগে দু’রাত ও তিনদিনের এই বিশেষ প্যাকেজে পর্যটকদের দেখানো হবে বেলপাহাড়ির পাথর শিল্পীদের গ্রাম, ঝাড়গ্রামের মৃৎশিল্প, হস্তশিল্পের মিউজিয়াম। ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত জানাচ্ছেন, এতদিন পর্যটকদের ঝাড়গ্রামের দর্শনীয় জায়গাগুলিতেই ঘোরানো হত। এ বার বিশেষ প্যাকেজে হস্তশিল্প ও কারুশিল্প যে সব গ্রামে তৈরি হয়, সেখানে যাওয়ার সুযোগ পাবেন পর্যটকেরা।
এই বিশেষ প্যাকেজে প্রথম দিনে পর্যটকদের ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি অঞ্চলের বামুনমারা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে কুমোরেরা ঘর সাজানোর মাটির ঘণ্টা, মাটির ঝাড়লণ্ঠন, মাটির হ্যারিকেন-সহ নানা সামগ্রী তৈরি করেন। এর পরে পুরাতন ঝাড়গ্রামের সরকারি উৎকর্ষতা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পর্যটকদের দেখানো হবে কী ভাবে শালপাতার থালাবাটি তৈরি হয়। সেখানে থাকা হস্তশিল্প মিউজিয়ামটিও দেখানো হবে পর্যটকদের। সেখানকার বিক্রয়কেন্দ্র থেকে পর্যটকেরা শালপাতার সামগ্রী, বাবুই ঘাসের তৈরি গৃহসজ্জার সামগ্রী, তসরের শাড়ি ও চাদর কেনার সুযোগ পাবেন। ওই সরকারি বিপণন কেন্দ্রে বেলপাহাড়ির পাথর শিল্পীদের তৈরি পাথরের বাসন ও পাথরের মূর্তিও কিনতে পাওয়া যায়। এ ছাড়াও জঙ্গলমহলের স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর মহিলাদের সংগৃহীত মধু, আদিবাসী-মূলবাসী মহিলাদের তৈরি বড়ি, মাশরুমও কেনা যাবে।
দ্বিতীয় দিনে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে বেলপাহাড়ির শিমূলপাল ও ঢাঙিকুসুম গ্রামে। ওই দু’টি গ্রামের পাথর শিল্পীরা কী ভাবে এখনও সনাতন পদ্ধতিতে পাহাড়ের পাথর সংগ্রহ করে তারপর খোদাই করে বাসন, মূর্তি ও গৃহসজ্জার সামগ্রী তৈরি করেন— তা দেখতে পারবেন পর্যটকেরা। শিল্পীদের গ্রাম দেখার অবসরে ঢাঙিকুসুমের হদহদি ঝর্নাও দেখানো হবে পর্যটকদের। পাশাপাশি বেলপাহাড়ির গাডরাসিনি, খাঁদারানি ও ঘাগরার মতো পর্যটন স্থলগুলিও সেই সঙ্গে দেখানো হবে। ফেরার দিনে কাকভোরে টাটকা খেজুর রসে গলা ভিজিয়ে নেওয়া যাবে। বেড়ানোর অন্তিম পর্বে ঝাড়গ্রামের শিল্পী মানব বাগচীর কাটাম-কুটুমের স্টুডিয়োও দেখানো হবে।