শস্যবীজ দিয়ে রাখি তৈরিতে ব্যস্ত বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুরা। —নিজস্ব চিত্র।
কুমড়োর বীজ, ধান ইত্যাদি দিয়ে বানানো হচ্ছে পরিবেশবান্ধব রাখি। আর এগুলি বানাচ্ছে দাঁতন মানব কল্যাণ কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা। কেন্দ্রের ১২ জন বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় বানাচ্ছে এই রাখি।
গত দু’মাস ধরে চলছে এই রাখি বানানো। আগামী বৃহস্পতিবার রাখিবন্ধনের পরের দিন পরিবেশবান্ধব রাখিগুলি দিয়ে ‘বন্ধন’ সুদৃঢ় করার অঙ্গীকার করবে তারা। জেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পৌঁছে যাওয়া হবে। আধিকারিকদের হাতে পরানো হবে হাতে তৈরি রাখি। বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুরাই এই কাজটি করবে।
কেন্দ্রের যমুনা বালিকা আবাস ও নিয়তি ডে-কেয়ার সেন্টারের শিশুরাই রাখি বানাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের রাখি বানাতে ব্যবহার করা হচ্ছে কাগজ, তুলো, কুমড়োর বীজ, ধান, আঠা, পাট, রঙ ও বিভিন্ন রঙের সুতো। কেন্দ্রটি জানাচ্ছে, একেবারেই পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়েই তৈরি এই রাখি। রাখিতে লেখা ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের হাতে তৈরি রাখি’। ইতিমধ্যেই এই রাখির চাহিদা বেড়েছে। অনলাইনে তথা সমাজমাধ্যমেও রাখি বিক্রি করছে কেন্দ্রটি। কলকাতা, দিল্লি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক জায়গায় বিক্রি হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা স্বাস্থ্য দফতর, নাবার্ডের অফিসে পৌঁছে গিয়েছে বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের হাতে তৈরি রাখিগুলি। সেগুলি বেশ প্রশংসিতও হয়েছে।
জানা গিয়েছে, প্রতিটি রাখি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা, ২৫ টাকা এবং ৩০ টাকায়। দাঁতন ও মেদিনীপুরে অস্থায়ী স্টল দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের ছাত্রী চণ্ডী সিংহ, হাবিবা খাতুনেরা বলে, ‘‘দিদিমণিরা একটা বানিয়ে দেখিয়ে দেন। তারপরে সেটা দেখে আমরা বানাতে পারি। বেশ ভাল লাগে। প্রায় দু’মাস আগে থেকে প্রতিদিন বানাচ্ছি।’’ কেন্দ্রটি জানাচ্ছে, প্রায় ১৩০০ রাখি বানানো হয়েছে। কেন্দ্রের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসার সুচরিতা পাঁজা বলেন, ‘‘বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুরা সমাজের মূল স্রোতে যাতে থাকতে পারে তার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ রাখি বিক্রির টাকা তথা লভ্যাংশ শিশুদের অ্যাকাউন্টে তাদের ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা হবে জানাচ্ছে কেন্দ্রটি। দাঁতন মানব কল্যাণ কেন্দ্রের সহ-সম্পাদক রমেশ মান্না বলেন, ‘‘খরচ বাদ দিয়ে উদ্বৃত্ত অর্থ শিশুদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে। এতে তাদের ভবিষ্যতের চলা সুগম হবে।’’