গোয়ালতোড় রেঞ্জে। ছবি বন দফতরের সৌজন্যে
হাতির দল লালগড়ের জঙ্গল ছেড়ে ঢুকল গোয়ালতোড় রেঞ্জের জঙ্গলে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ৪০-৪২ টি হাতির একটি বড় দল লালগড়ের জঙ্গল ছেড়ে গোয়ালতোড় রেঞ্জের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। প্রথমে তারা টেসাবাঁধের জঙ্গলে ঢোকে। পরে ডেরা বদলে শুক্রবার দঁাতালেরা বেনাচাপড়ার জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। দলটিতে কয়েকটি হস্তিশাবকও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বছরের শুরুতে ভরপুর আলু ও আনাজ চাষের সময় হাতির দল ঢুকে যাওয়ায় চিন্তিত কৃষকেরা।
গোয়ালতোড়, গড়বেতার বিস্তীর্ণ এলাকায় আলু-সহ প্রচুর শীতকালীন ফসলের চাষ হয়। বিঘার পর বিঘা জমিতে এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালং, টোম্যাটো-সহ হরেক আনাজ। এই সময় গোয়ালতোড় সীমানায় হাতির বড় দল ঢুকে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বন দফতরও। খাবারের খোঁজে হাতিরা জঙ্গল থেকে বেরোলে ক্ষতি বাড়বে। তাই যতটা সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আগেভাগেই সতর্ক বন দফতর। হাতিদের গতিবিধির উপর নজরদারি ও অতিরিক্ত সতর্কতা হিসাবে জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নিবিড় প্রচার শুরু করে দিয়েছে বন দফতর। দফতরের গোয়ালতোড় রেঞ্জের অফিসার খুরশিদ আলম বলেন, ‘‘বুনো হাতির দল এলে কী করা উচিত, আর কী অনুচিত তা মানুষকে জানাতে গ্রামে গ্রামে প্রচার করছি। মাইকে প্রচারের সঙ্গে ছাপানো লিফলেটও বিলি করব আমরা। মানুষকে বোঝানো হবে হাতিদের অযথা উত্ত্যক্ত করা থেকে বিরত থাকা কতটা জরুরি।’’
সদ্য শেষ হওয়া বছরে দক্ষিণবঙ্গে যে ক’টা হাতির মৃত্যু হয়েছে তার বেশিরভাগই বিদ্যুতের তারের স্পর্শে হয়েছে। কৃষকেরা তাঁদের ফসল বাঁচাতে অনেক সময় জমির চার দিকে তারের বেড়া দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ করে থাকেন। হাতির দল ফসল খেতে হানা দিতে এলে সেই তারের স্পর্শে শক খেয়ে পালিয়ে যায়। এতে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত হয় হাতির। এ বার সেই প্রবণতা ঠেকাতে বন দফতর থেকে মানুষকে বোঝানো হচ্ছে— হাতিদের চলার পথে অথবা জমিতে কেউ বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রাখবেন না। রেঞ্জ অফিসার খুরশিদ আলম আরও বলেন, ‘‘মদের প্রতি হাতির টান বরাবর। তাই প্রচারে বলে দেওয়া হচ্ছে বাড়িতে দেশি মদ রাখবেন না। এমনকি মদ খেয়ে হাতির কাছে যাতে কেউ না যান তাও বলা হচ্ছে প্রচারে।’’