আদিবাসী নাটকের একটি দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র
নাটক শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা সাতটায়। কিন্তু সেই নাটক শুরু হল প্রায় রাত ন’টায়। হাতির আতঙ্কে মঙ্গলবার রাতে আদিবাসী নাটক শুরু করতে দেরি হল গোয়ালতোড়ে। এমনকী, দাঁতাল আতঙ্কে কার্যত ফাঁকাই রইল দর্শকাসনও।
রাজ্যের আদিবাসী উন্নয়ন দফতর ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার গোয়ালতোড়ে আয়োজন করা হয় আঞ্চলিক স্তরের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভাষায় রচিত একাঙ্ক নাটকের প্রতিযোগিতা। যেখানে অংশ নিয়েছিল জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে আসা ১৩টি আদিবাসী নাট্যদল। মঙ্গলবার বিকেলে গোয়ালতোড় হাইস্কুল মাঠে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সন্ধ্যা সাতটা থেকে নাটক শুরু হওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই গোয়ালতোড়ের আশেপাশের এলাকায় হাতির দলের দাপাদাপি শুরু হয়। প্রায় ৪০-৪৫টি হাতির একটি দল জঙ্গল ছেড়ে আলু ও আনাজের খেতে চলে আসায় আতঙ্ক দেখা দেয় জিরাপাড়া, গোয়ালডাঙা প্রভৃতি এলাকায়। এলাকায় হাতি ঢোকার পৌঁছতেই গোয়ালতোড় হাইস্কুলের মাঠ ফাঁকা হতে থাকে। এমনকী, খাপরিভাঙা, কেড়ুমারা, কিয়ামাচার জঙ্গলে হাতি থাকায় এই রাস্তা দিয়ে কয়েকটি নাটকের দলও আসতে পারছে না বলে তাঁরা মোবাইলে জানান উদ্যোক্তাদের। হাতির আতঙ্কে এক সময় নাটক শুরু করা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। যদিও ঘণ্টা দু’য়েক পর রাত ন’টা নাগাদ নাটক শুরু হয়।
গড়বেতা ২ ব্লকের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের সহ-আধিকারিক শচীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘আশেপাশের এলাকায় হাতির দলের আনাগোনায় মানুষের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছিল। কয়েকটি নাট্যদলও ঘুরপথে আসে, তাই কিছুটা বিলম্বেই নাটক শুরু করা হয়। যদিও তারপর আর কোনও সমস্যা হয়নি।’’ ব্লকের সমাজকল্যাণ আধিকারিক সুব্রত বাজপেয়ী বলেন, ‘‘শুরুতে দেরি হলেও আদিবাসী নাটক প্রতিযোগিতা সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে। তবে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার পাশাপাশি হাতির আতঙ্ক— দু’য়ে মিলে দর্শক কিছুটা কম ছিল।’’ বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪০-৪৫টি মতো হাতির একটি দল গোয়ালতোড়ের খাপরিভাঙার জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখছে বনদফতর।
এদিকে চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের রাধাবল্লভপুর এলাকায় মঙ্গলবার রাতে ১৬-১৭টি হাতি প্রচুর আলুচাষের ক্ষতি করে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। বনকর্মীদের সাথে এলাকার বাসিন্দারা রাতেই হাতিগুলিকে তাড়িয়ে পাশের জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেন।