চন্দ্রকোনার আদকাটা সংলগ্ন এলাকায় আলু চাষের জমির অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
রবিবার রাতেও চন্দ্রকোনার একাধিক গ্রামে দাপাল হাতির পাল। ঘণ্টাতিনেক ধরে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে তাণ্ডব চালায় তারা। জমিতে নেমে আলু, সর্ষে, আনাজের খেত নষ্ট করে দেয়। ভোরের দিকে ধামকুড়া জঙ্গল ছেড়ে চন্দ্রকোনার কামারখালি ও পোড়াহাড়ি জঙ্গলে ঢুকে যায় তারা। সোমবার দুপুরেও চন্দ্রকোনার কামারখালি জঙ্গলেই ছিল হাতির পালটি। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “রবিবার রাতে চন্দ্রকোনায় আলু জমির ক্ষতি হয়েছে। সঙ্গে সর্ষে ও আনাজও রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চলছে।”
হাতির হানায় ক’দিন ধরেই ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছিল চন্দ্রকোনায়। তবে রবিবার রাতে চার-পাঁচটি মৌজায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ বেশি। হাতির হানায় ফসলের ক্ষতি রুখতে গ্রামবাসীরা মাঠে রাত পাহারা দিচ্ছিলেন। তবে তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার রাত ১০টা নাগাদ ধামকুড়া জঙ্গল থেকে ১৬টি হাতি বেরিয়ে আসে। ধামকুড়া গ্রামের আলু জমি তছনছ করে মেঠো রাস্তা ধরে এগোতে শুরু করে। পিছনে বনকর্মী, হুলাপার্টির লোকজন হাতির দলটিকে তাড়া করলেও কাজ হয়নি। হাতির দলটি অযোধ্যা, সীতানগর, প্রসাদপুর, নীলগঞ্জ হয়ে কলোনি মৌজায় আলু-সর্ষের খেত নষ্ট করে পোড়াহাড়ি জঙ্গলের দিকে চলে যায়।
চাষিদের অভিযোগ, বন দফতরের উদাসীনতায় জন্যই এই পরিস্থিতি হচ্ছে। ফসলের ক্ষতি বাড়ছে। বন দফতরের বিভিন্ন রেঞ্জ অফিসগুলির সমন্বয়ের অভাবের জন্যই এই ঘটনা বলে দাবি তাঁদের। ধামকুড়া গ্রামের অনুপ ভুঁইয়া, অযোধ্যার গোষ্ঠ কোলেদের ক্ষোভ, চলতি মরসুমে অসময়ের বৃষ্টিতে অনেক জমির আলু নষ্ট হয়েছে। এবার হাতির হানায় অবশিষ্ট জমির আলুও নষ্ট হতে বসেছে। সীতানগর গ্রামের লক্ষীকান্ত ঘোষের আক্ষেপ, “হাতির হানার জন্য বিঘা পিছু আড়াই হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ মিলবে। সেখানে চাষ করতেই তো ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে!’’ তাঁর অভিযোগ, রবিবার রাতে হাতির হানায় এত ক্ষয়ক্ষতির পরে বন দফতরের কেউ পরিদর্শনেও আসেননি। যদিও বন দফতরের মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেরওয়াল বলেন, “হাতিগুলিকে গভীর জঙ্গলে পাঠানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে যাতে আর ক্ষতি না হয়, তার জন্য নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষও হাতিদের বিরক্ত করছেন। সেই বিষয়েও সচেতন হতে হবে।”