ধান জমির উপর দিয়েই গিয়েছে হাতির পাল। গুড়গুড়িপালে।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে হাতি নিয়ে বিড়ম্বনায় বন দফতর। কয়েক বছর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক প্রশাসনিক বৈঠকে হাতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল জেলার বন আধিকারিকদের। এ বার যাতে তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তাই আগেভাগেই সতর্ক বন দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে হাতিদের গতিবিধি নজরে রাখা শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে হাতির অবস্থান নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বন দফতরকে।’’ জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ জানান, এখন ধান পাকছে। তাই হাতি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। তাদের অন্যত্র সরানোর চেষ্টা হচ্ছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতির একটি দল প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে মেদিনীপুর ডিভিশনের জঙ্গলে আছে। ৬৫-৭০টি হাতির ওই দলে ২০-২৫টি শাবকও আছে। বেশ কয়েকদিন তারা মেদিনীপুর সদর, শালবনি, চন্দ্রকোনা রোড এমনকি গোয়ালতোড় ব্লক এলাকার জঙ্গলেও ঘোরাফেরা করছে। জানা গিয়েছে, সেই দলটির একটি অংশ এখন আড়াবাড়ি রেঞ্জের জোড়াকুশমির জঙ্গলে ডেরা বেঁধে আছে। আরেকটি অংশ শনিবার রাতেই তমাল নদী পেরিয়ে চন্দ্রকোনা রোডের নয়াবসত রেঞ্জের জঙ্গলে চলে এসেছে।
হাতির দলের বারবার ডেরা বদলে ক্ষয়ক্ষতিও বাড়ছে। শনিবার রাতেই জোড়াকুশমির জঙ্গলে থাকা দলটি শালবনির ধানঘোরিয়া, লালুয়া, ভাউদি-সহ প্রভৃতি এলাকায় বিঘার পর বিঘা ধান ও আনাজ খেতের ক্ষতি করেছে। হাতির হানায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে চাঁদড়া, গুড়গুড়িপাল, নয়াবসত, গোয়ালতোড়, মাহালিসাই, হুমগড় রেঞ্জ এলাকাতেও। চাষে ক্ষতি বাড়ায় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকার মানুষেরও। এই পরিস্থিতিতেই উদ্বেগ বাড়ছে বন দফতরের।
মেদিনীপুর ডিভিশনের ডিএফও সন্দীপ বেরওয়াল মানছেন, ‘‘বেশ কয়েকদিন ধরেই মেদিনীপুর ডিভিশনের জঙ্গলে ৭০টির মতো হাতি রয়েছে। তারা যাতে কম ক্ষতি করে সেটাই দেখা হচ্ছে। জঙ্গলের মধ্যেই তাদের আটকে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তবুও খাবারের সন্ধানে তারা বাইরে বেরিয়ে পড়ছে।’’ রূপনারায়ণ ডিভিশনের ডিএফও মনীশ যাদব জানান, তাঁর ডিভিশনে ২-৩টি হাতি ঘোরাঘুরি করছে। তবে পাশাপাশি জঙ্গল হওয়ায় যেকোনও সময় অন্য ডেরা থেকে আরও হাতি সেখান ঢুকে পড়তে পারে।