তছনছ: কাঁটাতারের বেড়া ভেঙেছে। নিজস্ব চিত্র
হাতির হানা এ বার ইএফআর ঘাঁটিতে।
শনিবার গভীর রাতে কলাইকুণ্ডার জঙ্গল ছেড়ে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে সালুয়ায় ইএফআর ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ল প্রায় ২৮টি হাতির দল। রবিবার সারাদিন ক্যাম্পাসের ভিতরেই শালপাতার জঙ্গলে ছিল হাতিগুলি। ফলে, আতঙ্কে আশপাশের বস্তির বাসিন্দাদের থেকে ইএফআর কোয়ার্টারের বাসিন্দারাও। তবে রাত থেকেই ঘটনাস্থলে রয়েছেন বনকর্মীরা। হাতির দলটিকে ইএফআর ক্যাম্পাসের পিছনের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। ভোরে জঙ্গলে আশ্রয় নেয় হাতির দলটি। সেখানে তাদের ঘিরে রেখেছেন বনকর্মীরা। ডাকা হয়েছে হুলাপার্টি। রাতে হাতিগুলিকে স্বাভাবিক গতিপথে ফিরিয়ে দেওয়া চেষ্টা হবে বলে জানিয়েছে বন দফতর।
বন দফতর সূত্রের খবর, ফসলের টানে বারবার লোকালয়ে ফিরে আসছে দলমার হাতির দল! তবে এ বার ইএফআর ক্যাম্পাসে হাতি ঢুকে পড়ায় সালুয়ার নেপালি বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। কেন বন দফতর আগাম সতর্ক হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
বন দফতর সূত্রে খবর, পুজোর আগেই দলমার একটি বড় দল তিনটি দলে ভাগ হয়ে যায়। আগেই একটি দলকে লালগড়ের দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। দুর্গাপুজোর পরে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলের জঙ্গলে থাকা বাকি দু’টি দলকে ওড়িশার দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে লালগড়ের দিকে চলে যাওয়া হাতিগুলি শনিবার ভোরে ফের মেদিনীপুর হয়ে কাঁসাই পেরিয়ে কলাইকুণ্ডা রেঞ্জে ঢুকে পড়ে। জঠিয়া, ট্যাঙ্গাশোল, কাঁথরা, মাধবপুর হয়ে লোকালয়ের দিকে এগোয়। পরে সালুয়ায় পৌঁছয় তারা। নয়াবস্তি ভিতর দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে ইএফআর ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। নয়াবস্তির হেমা ছেত্রী বলেন, “রাতে এলাকায় খাওয়াদাওয়া থাকায় জেগেই ছিলাম। হঠাৎ দেখি বাড়ির গেটের পাশ দিয়ে পরপর হাতি যাচ্ছে। চারদিকে চিৎকার। খুব ভয় হচ্ছিল।’’
ট্যাঙ্গাশোল, কাঁথরা, মাধবপুরে ফসলের ক্ষতি করেছে হাতিগুলি। আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। ইএফআর জওয়ান রূপেন্দর লামা বলেন, “রাতে ডিউটিতে ছিল। কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে হাতি ঢুকেছে শুনে ছুটে গিয়ে দেখি অনেক হাতি। সকালেও ওরা ক্যাম্পাসের জঙ্গলে থাকায় রাতে কী হবে ভাবছি।’’ ভেটিয়ার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রোশন ঘিসিং বলেন, “সারা রাত চোখের পাতা এক করতে পারিনি।’’ খড়্গপুরের ডিএফও অরূপ মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “রাতে ফের হুলাপার্টি দিয়ে ওঁদের কলাইকুণ্ডার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। চাষে যা ক্ষতির নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’